আসামি ধরতে গিয়ে ফেরার পথে ২০/২৫ জনের একদল লোক দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে পুলিশের উপর অতর্কিত হামলা চালায়
চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের নরপতি ফুলবাড়ি এলাকায় মারামারি ও শ্লীলতাহানি মামলার আসামি ধরতে গিয়ে আসামির পরিবারের সদস্যদের হামলায় ৩ পুলিশ সদস্য সহ ৪ জন আহত হয়েছেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে আসামি জাকির মিয়া পালিয়ে যায়। হামলায় আহতরা হলেন- চুনারুঘাট থানার উপপরিদর্শক এসআই দেলোয়ার হোসেন (৩৮), এএসআই মোফাজ্জল হোসেন (৪২), কনস্টেবল জেবু (৩০) ও গ্রাম পুলিশ জবরু মিয়া (৩৭)। আহতদের উদ্ধার করে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে গুরুতর আহত এএসআই মোফাজ্জল হোসেনকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার মাথায় ৪টি সেলাই দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, চুনারুঘাট সদর ইউনিয়নের নরপতি ফুলবাড়ি এলাকার হানিফ মিয়ার পুত্র জাকির হোসেন গংদের বিরুদ্ধে মারামারি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় চুনারুঘাট থানায় একটি মামলা রুজু হয়। ওই মামলায় পুলিশ জাকির মিয়াকে গ্রেফতারে তার বাড়িতে অভিযান চালালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জাকির কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ থানার উদ্দেশ্যে রওয়া দিয়ে জাকিরের বসত বাড়ি থেকে ৫০০ গজ দক্ষিণে জনৈক মোঃ আবুল কাশেম মেম্বারের বাড়ির দক্ষিণ পাশে পৌঁছলে প্রায় ২০/২৫ জনের একদল লোক দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে পুলিশের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় পুলিশ তাদের ধাওয়া করলে পুলিশের উপর ইট-পাটকেল, বাঁশের লাঠি, লোহার রড, কাঠের রুল সহ দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে মারপিট শুরু করে তারা। এতে ৩ পুলিশ সহ ৪ জন আহত হন। খবর পেয়ে থানার জরুরি ডিউটিরত এসআই আলাওল হক সহ বিপুল পরিমাণ পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করে এবং আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে চুনারুঘাট হাসপাতালে ভর্তি করেন।
চুনারুঘাট থানার ওসি হিল্লোল রায় জানান, শনিবার রাত ১০ টায় উপজেলার ৬নং চুনারুঘাট সদর ইউনিয়নের অন্তর্গত ফুলবাড়ী আসামীর বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন এসআই দেলোয়ার ও এএসআই মোফাজ্জল হোসেন । এসময় আসামি মোঃ জাকির হোসেন এর বসত ঘরের সামনের দরজায় উপস্থিত হলে আসামী জাকির হোসেন পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়। ওই সময় ২০/২৫ জনের একদল লোক দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে পুলিশের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। খবর পেয়ে থানার অন্যান্য পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তাছাড়া ঘটনার সাথে জড়িত ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হলো- সদর ইউনিয়নের ফুলবাড়ী এলাকার মৃত নুর আলীর পুত্র রফিক মিয়া (৪৫) ও তার পুত্র রুমেন মিয়া (১৯), হানিফ উল্ল্যার মেয়ে রোকেয়া খাতুন (৪০), সেলিম মিয়ার স্ত্রী আঙ্গুরা খাতুন (২০) ও নরপতি গ্রামের আব্দুল কাদিরের পুত্র মোঃ আবুল কালাম (২৭)। তাদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাঁধা প্রদান সহ মারপিটের অভিযোগে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১০/১২ জন অজ্ঞাতনামার বিরুদ্ধে থানার উপপরিদর্শক এসআই দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।