স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডাঃ মুশফিক হুসেন চৌধুরী। নির্বাচনকে সামনে রেখে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গিয়াস উদ্দিন আহমেদকে আহবায়ক ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গতি গোবিন্দ দাশকে সদস্য সচিব করে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গতি গোবিন্দ দাশ পূর্ণাঙ্গ পরিচালনা কমিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপলোড করলে মুহূর্তেই তা নেতাকর্মীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। দেখা দেয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। শুরু হয় নানামুখি আলোচনা।
দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে স্থান না পাওয়ায় এবং বিএনপি থেকে যোগদান করা ব্যক্তিদের কমিটিতে রাখায় অনেকেই হতাশা ব্যক্ত করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ পদধারী নেতাদের রাখা হয়েছে সাধারণ সদস্যের শেষের দিকে। এ ছাড়াও বিভিন্ন কারণে দল থেকে বহিস্কার ও অব্যাহতি প্রাপ্ত লোকদের রাখা হয়েছে নির্বাচন পরিচালনার মতো গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে। কমিটিতে ৪ সমন্বয়কের মধ্যে সবাই ত্যাগী ও আওয়ামী লীগের সক্রীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ পদধারী নেতা। তাদের নিয়ে সাধারণ নেতাকর্মীরা সন্তুষ্ট হলেও যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদস্য পদে থাকা অনেক নামধারী আওয়ামী লীগ নেতার নাম দেখে হতাশ ত্যাগী নেতারা। এমনকি অনেক হাইব্রিডদের দেয়া হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ পদ। এ নিয়ে শুরু হয়েছে হৈ চৈ।
ইনাতগঞ্জ যুবলীগের সাবেক সভাপতি আশাহিদ আলী আশা বলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডাঃ মুশফিক হুসেন চৌধুরী। আমরা তার বিজয় নিশ্চিত করতে চাই। কিন্তু নির্বাচন পরিচালনা কমিটি সত্যিই হতাশাজনক। দলে এমন লোকও রয়েছেন সারা জীবন শুধু দলকে দিয়েই গেছেন। কিছু পাবার আশা করেননি। তাদের অবহেলা করা হয়েছে। মুখ দেখে পছন্দের লোককে কমিটিতে রাখা হয়েছে। আশাহিদ আলী আরো বলেন- সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ মিলাদকে সাধারণ সদস্য না রেখে সমন্বয়ক হিসেবেও রাখা যেত। অথচ একজন নির্বাচিত এমপিকে রাখা হয়েছে সাধারণ সদস্য হিসেবে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আলমগীর চৌধুরী সালমান ফেসবুকে লিখেছেন পক্ষপাত দুষ্ট নির্বাচন পরিচালনা কমিটি দেখে হতাশ। এই পোস্টে নয়ন পাঠান নামে একজন মন্তব্য করেন- দল থেকে বহিস্কার, দল সাধারণ ক্ষমা করেছে, দলীয় কোন পদ পদবী নাই ওদেরকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে রাখা হয়েছে। দলের সাথে সম্পৃক্ত আছে তাদেরকে বাহিরে রেখে বহিস্কৃতদের নিয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি করা হয়েছে যা দুঃখজনক।
শেখ আরিয়ান আহমেদ মিশু নামের একজন মন্তব্য করেন- সব শেষে একটা জিনিস খেয়াল করলাম, সম্মানী ব্যক্তিকে সম্মান দিতে কেও জানে না। সাজ্জাদুর হক নামে একজন লিখেছেন- নির্বাচন পরিচালনা কমিটি দেখে হতাশ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা জানান, বিএনপি থেকে আসা লোকদের কমিটিতে স্থান দিয়ে যারা আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ তাদেরকে বাদ দিয়ে স্বজন প্রীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। সত্যিই দুঃখজনক।
এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে নবীগঞ্জ পৌর যুবলীগের আহবায়ক ফজল আহমদ চৌধুরী বলেন- আওয়ামী লীগের পরাশক্তিরা অতি সুকৌশলে আওয়ামী লীগকে ডুবানোর চেষ্টা করছে। অতিতে যারা আওয়ামী লীগের বিরোধীতা করেছে প্রকাশ্যে ও পরোক্ষভাবে তারাই আবার নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে ঢুকে আওয়ামী লীগকে ডুবানোর কৌশল করছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গতি
এ ব্যাপারে জানতে গতকাল রাত ১০ টা ১০ মিনিটে অ্যাডভোকেট গতি গোবিন্দ দাশের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন- প্রার্থীর সাথে আলোচনা করে দুই দিনের ভিতরে আবার নতুন করে কমিটি প্রকাশ করা হবে।