সাবেক চেয়ারম্যান তালিব হোসেনের প্রতি কৃতজ্ঞতা ॥ উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরের ঘোষপাড়া এলাকায় তারাপুকুরের সাথে সাড়ে ৭ শতক জমি ক্রয় করেছিলেন সাবেক পৌর চেয়ারম্যান মরহুম অ্যাডভোকেট ফকির তালিব হোসেন। এলাকায় রাস্তা না থাকায় ১৯৮২ সালে অর্ধ কোটি টাকা মূল্যের ৪ শতক জমি বিনিময় শর্তে রাস্তা করেন সাবেক চেয়ারম্যান তালিব হোসেন। অবশিষ্ট জমি তালিব হোসেন এর পরিবারের ভোগ দখলে থাকলেও বিভিন্ন সময় পৌর কর্তৃপক্ষ সেই জমি দখলে নিতে গেলে জটিলতার সৃষ্টি হয়। কিন্তু বর্তমান মেয়র আতাউর রহমান সেলিম উদ্যোগ নিয়ে যৌথ জরিপের মাধ্যমে ফকির তালিব হোসেন এর পরিবারের জমি চিহ্নিত হওয়ার পর সেই জমি বিনিময় করে তালিব হোসেন এর পরিবারকে পৌরসভার কোন মার্কেটে দোকান দিতে সম্মত হন। আর তালিব হোসেন এর দেয়া রাস্তাটি তার নামে নামকরণের জন্য এলাকাবাসীর সমর্থন নিয়ে আবেদন করতে বলেন। আর এভাবেই তারাপুকুরের জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ নিস্পত্তি হয়।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) সকালে পৌরসভার উদ্যোগে ঘোষপাড়া এলাকায় তারাপুকুরের চারদিকে রাস্তা ও ড্রেনসহ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন মেয়র আতাউর রহমান সেলিম। ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর পূর্বে তিনি বেবীস্ট্যান্ড কলেজ রোড হতে ঘোষপাড়া এলাকায় প্রবেশের প্রধান রাস্তাটির জায়গা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। রাস্তাটি হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মরহুম অ্যাডভোকেট ফকির তালিব হোসেন সুলতান মাহমুদপুর মৌজার এস এ ২২১৭নং দাগের নিজ খরিদা জমিতে এলাকাবাসীর স্বার্থে পৌরসভার সাথে বিনিময়ের শর্তে ১৯৮২ সনে নির্মাণ করেছিলেন। এর পূর্বে পুকুরের এই পশ্চিম পার্শ্বে কোন রাস্তা ছিল না। অ্যাডভোকেট ফকির তালিব হোসেন নিজের খরিদা সাড়ে সাত শতাংশ কচু ক্ষেতের চার শতাংশের উপর রাস্তা নির্মাণ করার পর তার অবশিষ্ট আরও সাড়ে তিন শতাংশ জমি রাস্তার পার্শ্বে থেকে যায় এবং এই সাড়ে তিন শতাংশ ভূমি ভেঙ্গে পৌরসভার তারাপুকুরের (সুলতান মাহমুদপুর এস এ দাগ নং-২২১৪) এর সাড়ে ছত্রিশ শতাংশ ভূমির সাথে একীভূত হয়ে যায়। আর এস রেকর্ডে পৌরসভার পুকুরের সাথে এক দাগে ৪০ শতাংশের (দাগ নং-১৫৫৬২) অংশ হিসাবে আলাদা খতিয়ানে (২৫৫২নং খতিয়ানে) অ্যাডভোকেট ফকির তালিব হোসেনের নামে রেকর্ড হয়। অ্যাডভোকেট ফকির তালিব হোসেন পরিবার উক্ত সাড়ে তিন শতাংশ জায়গার ভরাট অংশে গাছ পালা লাগিয়ে এবং টিনের বেড়া দিয়ে ভোগদখল করে আসছিলেন। রাস্তায় প্রদান করা তাদের চার শতাংশ জায়গার পরিবর্তে পুকুর থেকে দেওয়ার জন্য সাবেক চেয়ারম্যান শহীদ উদ্দিন চৌধুরীর সময়কার পৌর পরিষদ ১৯৯৭ সালে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত এখন অবধি বাস্তবায়ন হয়নি।
আতাউর রহমান সেলিম মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট তালিব হোসেন পরিবারবর্গ বিষয়টি তাকে অবহিত করলে তিনি বিষয়টি বিকল্প উপায়ে সমাধানের আশ্বাস দেন এবং একাধিক বার শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ বৈঠকের পর শনিবার নির্মাণ কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় এই সংক্রান্ত সুস্পষ্ঠ ঘোষণা দেন।
মেয়র সেলিম বলেন, পৌরসভার জায়গা মানুষ নেয়। অ্যাডভোকেট তালিব হোসেন সেখানে নিজের জায়গা দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করে গেছেন। তিনি বড় মনের মানুষ ছিলেন। তার সম্মানার্থে এলাকাবাসী সমর্থন নিয়ে তিনি এই রাস্তা অ্যাডভোকেট ফকির তালিব হোসেন এর নামে নামকরণ করার প্রতিশ্রুতি দেন। অ্যাডভোকেট তালিব হোসেন পরিবারকে রাস্তার জায়গার কোন বিনিময় না চেয়ে সদকায়ে জারিয়া হিসেবে দিয়ে দেয়ার অনুরোধ করেন। আর রাস্তা পরবর্তী অ্যাডভোকেট তালিব হোসেন এর পুকুরে থাকা অবশিষ্ট সাড়ে তিন শতাংশ জায়গার বিনিময়ে পৌরসভার নির্মিতব্য নজীর সুপার মার্কেটের সামনে মার্কেট থেকে দোকান ঘর প্রদানের আশ্বাস দেন এবং তালিব হোসেনের পরিবারকে পুকুরে তাদের অংশের সাড়ে তিন শতাংশ জায়গা এলাকাবাসী ও পরিবেশের স্বার্থে ছেড়ে দেয়ার আহবান জানান। পরে অ্যাডভোকেট তালিব হোসেন এর পরিবারের পক্ষ থেকে সম্মত হলে উপস্থিত এলাকাবাসী মেয়র সেলিমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন।