নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জে যানজট এক ভয়াবহ সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। যানজটের কারণে নির্দিষ্ট সময়ে কর্মস্থলে বা গন্তব্যে পৌঁছানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। যানজট নবীগঞ্জের নাগরিক জীবনে নিত্যদিনের এক অসহনীয় ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। যতই ক্ষোভ ও বিরক্তির কারণ হোক এর হাত থেকে কেউই রেহাই পাচ্ছেন না। যান চলাচলের রাস্তার স্বল্পতা, অপরিসর রাস্তার মোড়ে মোড়ে ফুটপাতে দোকান বসিয়ে রাস্তা দখল এবং সিএনজি, মিশুক ও বাস থামিয়ে যাত্রী তোলা ও নামানো, অনিয়ন্ত্রিত ট্রাফিক ব্যবস্থা, হকারদের ফুটপাত দখলের কারণে যানজট মুক্ত হচ্ছে না নবীগঞ্জ। তাছা যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়- রাস্তার যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের কোন তৎপরতা নেই। যানজটের কারণে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, চাকুরিজীবী, কর্মজীবীসহ সকলেই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। উপজেলা প্রশাসন যানজট নিরসনে উদ্যোগী ভূমিকা নেয়ার জন্য একাধিকবার আইন-শৃঙ্খলা সভায় পৌরসভাকে তাগিদ দিয়েছে। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ প্রাণপন চেষ্টা চালিয়েও যানজটের কবল থেকে পৌরবাসীকে মুক্ত করতে পারছে না।
এক পথচারী এই প্রতিবেদকে বলেন, নবীগঞ্জ শহর এখন রাজধানীর মতো হয়ে গিয়েছে। তীব্র যানজটে পড়ে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। হকারদের ফুটপাত দখল করাকে তিনি যানজটের জন্য দায়ী করেন। তিনি বলেন- ফুটপাতের দোকানগুলোর জন্য গাড়ি নিয়ে ঠিকমতো যাওয়া দূরের কথা, পায়ে হেটে যাওয়াও কষ্টকর। যানজটে আটকা পড়া এক এম্বুলেন্স চালক বলেন, রোগী নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা জ্যামে আটকা পড়ে আছি। গাড়ির ভিতরে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন রোগী। কিন্তু যানজট নিরসনে কোন ট্রাফিক পুলিশ দেখতে পাইনি।
নবীগঞ্জ অটোরিক্সা, মিশুক, টমটম, ভ্যান, ইজিবাইক, শ্রমিক সমন্বয়ে গঠিত নবীগঞ্জ উপজেলা শাখার মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি রুস্তম আলী বলেন, নবীগঞ্জ শহরের যানজট নিরসনে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে ৫ জন কমিউনিটি ট্রাফিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করি উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষ যদি সহযোগিতা করেন তাহলে অচিরেই নবীগঞ্জ শহরকে যানযট মুক্ত শহর হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মিয়া বলেন, নবীগঞ্জে যানজট সৃষ্টি হওয়ার প্রধান কারণ ফুটপাতে দোকান বসিয়ে রাস্তা দখল করা। আমরা আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে যানযট নিরসনে কমিউনিটি ট্রাফিকের ব্যবস্থা করেছি। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়েছিল। এ প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষ ফুটপাত এবং রাস্তা দখলমুক্ত করেছিলেন। কিন্তু ইদানিং রাস্তা দখল সেই আগের মতো হয়ে গেছে। ফলে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব ছাবির আহমেদ চৌধুরী বলেন, যানজট নিরসনে বেশ কয়েকবার উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী সহ সকলের সহযোগিতায় মাসব্যাপী অভিযান চালিয়ে যানজট জিরো টলারেন্সে নিয়ে এসেছিলাম। তিনি বলেন, একমাত্র আমার সময়ে এরকম উদ্যোগী ভূমিকা নিয়েছিলাম। ড্রেন নির্মাণ কাজ শেষ হলে এভাবে আর যানজট সৃষ্টি হবে না বলে তিনি মনে করেন।