স্টাফ রিপোর্টার ॥ লাখাইর ভাদিকারা গ্রামে বাড়ির জায়গা নিয়ে বিরোধের জের ধরে সুমন আহমেদ সানি ওরফে সুমন মিয়া নামের এক সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় আহত সানিকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ আড়াইশ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত সানি লাখাই থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আহত সুমন আহমেদ সানি জানান, তিনি দীর্ঘদিন ঢাকার একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকাতে কাজ করছেন। তার পরিবার প্রায় ৩০/৩২ বছর ধরে ঢাকাতে বসবাস করেন। প্রায় ৮ বছর পূর্বে ভাদিকারা গ্রামের চানপাড়ার বাসিন্দা মরহুম জলাই মিয়ার ছেলে সানিদের পৈত্রিক ভিটে ঘর বানিয়ে বসবাস শুরু করেন তারই ফুফু একই গ্রামের মৃত মুতি মিয়ার স্ত্রী হাবিবা খাতুন। ২/৩ বছর পূর্বে সানি ও তার পরিবার সদস্যরা হাবিবা খাতুনকে জানান, তারা তাদের ভিটে ঘর বানাবেন। এ জন্য হাবিবাকে সেখান থেকে চলে যেতে। ঘর বানানোর জন্য সানি বাড়িতে ইট ও বালু নেন। কিন্তু হাবিবা গায়ের জোরে তাদের পৈত্রিক ভিটা দখল করে রাখেন। এ নিয়ে হাবিবার সাথে সানিদের বিরোধ বৃষ্টি হয়। এ বিরোধের জের ধরে হাবিবা তার মেয়ে মীর ফারজানা আক্তারকে দিয়ে আদালতে একটি নারী নির্যাতন মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৮১/২০২০ইং। পরবর্তীতে এ নিয়ে তাদের মধ্যে চরম বিরোধ সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় তাদের বিরুদ্ধে নিস্পত্তির জন্য ২০২০ সালের ২১ অক্টোবর এক শালিস বৈঠকের আয়োজন করেন। বামৈ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এনামুল হক মামুনের সভাপতিত্বে এবং বিশিষ্ট মুরুব্বী তাউছ মিয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত শালিস বৈঠকে এলাকার বিশিষ্ট মুরুব্বীয়ান উপস্থিত ছিলেন। শালিসে প্রমাণিত হয় হাবিবার দখলকৃত জায়গার প্রকৃত মালিক সানির বাবা জলাই মিয়া। শালিসে হাবিবাকে ৬ মাসের মধ্যে ওই জায়গা থেকে তার ঘর সরিয়ে নেওয়াসহ সানির বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। শালিসে হাবিবা ওই সিদ্ধান্ত মেনে রেজুলেশন খাতায় স্বাক্ষর করেন। কিন্তু কিছুদিন পরই হাবিবা শালিসের রায় অমান্য করে সানিদের নানাভাবে হয়রানি শুরু করেন। সানি ও তার পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে এসে তাদের ভিটেতে গেলে হাবিবা ও তার ছেলে মেয়েরা তাদের গালি-গালাজ শুরু করেন। তা সহ্য করে সানিরা আবারও ঢাকাতে চলে যান। সর্বশেষ সোমবার সানি বাড়িতে আসেন। তাকে বাড়িতে দেখেই হাবিবা গালি-গালাজ শুরু করেন। এ সময় সানি এর প্রতিবাদ করলে হাবিবা ও তার ছেলে-মেয়ে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। সন্ধ্যায় ফেরার সময় ভাদিকারা বাজারে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হাবিবা, তার ছেলেসহ অন্যান্য আত্মীয় স্বজনরা তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় তার শোর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে তারা পালিয়ে যায়। পরে হামলায় আহত সানিকে হবিগঞ্জ আড়াইশ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে এসে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এ ব্যাপারে সোমবার রাতেই লাখাই থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন সানি। এ ব্যাপারে লাখাই থানার ওসি তদন্ত চম্পক দাম জানান, তদন্ত সাপেক্ষে আসামীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।