মাধবপুর প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের ৩টি ভূমিহীন পরিবার ৪ বছরেও ভূমির দখল পায়নি। দখল পেতে বিগত ৪ বছর ধরে ভূমি অফিসের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছে। এর মধ্যে ধর্মপুর গ্রামের ভূমিহীন আব্দুর রহমান গত ১ বছর আগে মারা গেছেন। জমি দেখে যেতে পারেননি। জমির দখল পেতে মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে ৩টি পরিবার আবেদন করেছেন।
ধর্মপুর গ্রামের ভূমিহীন নুরুজ্জামান জানান, ২০১৯ সালে সরকার ভূমিহীন হিসেবে দত্তপাড়া মৌজায় তার নামে ৪ শতক জমি সাব কবলা দলিল নিবন্ধন করে দেন। নিজের কাছে জমির কাগজপত্র থাকার পরও জমির দখল বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। জমির দখল পেতে বার বার ভূমি অফিসে গিয়েও কোন কাজ হয়নি। এখন আমরা ধর্মঘর দিঘীর পাড়ে কোন রকম দিন যাপন করছি। একই মৌজায় আব্দুর রহমান নামে এক ভূমিহীনকে ৪ শতক জমি সরকারিভাবে দলিল করে দেওয়া হয়। জমি পেতে আব্দুর রহমান ভূমি অফিসে অনেক ঘোরাফেরা করেছেন। কিন্তু জমি আর দেখে যেতে পারেনি। আব্দুর রহমানের ছেলে খোকন মিয়া জানান, সরকার অনেক ভূমিহীন পরিবারকে ঘর সহ জমি দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের ভাগ্য খুবই খারাপ ৪ শতক জমি পেলেও ভূমি অফিস আমাদের জমি সমজিয়ে দিতে পারেনি। জমির আশা আশা করে আমার পিতা আব্দুর রহমান গত বছর মারা গেছেন। সেই জমি আমরা পাব কি-না তা জানিনা। ৫০ বছর বয়স্ক ধর্মপুর গ্রামের আব্দুল মমিন জানান, আমাদের দলিল আছে জমি নেই। ভূমি অফিস আন্তরিক হলে এতদিনে আমাদের দলিলের জমি দখল পেয়ে যেতাম। কিন্তু গত ৪ বছর ধরে মনতলা ভূমি অফিসে শতবার গিয়েছি। কিন্তু জমির দেখা আর পেলাম না। জমিটা দখলে পেলে এর মধ্যে ঘর বাড়ি করে পরিবার নিয়ে দিন কাটাতে পারতাম।
ধর্মঘর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ পারুল বলেন, যেহেতু সরকার ৩টি ভূমিহীন পরিবারকে ঘরবাড়ি করার জন্য জমি দিয়েছেন তাই ভূমি অফিসের উচিত ছিল তাদের নামে দলিল করা জায়গা বুঝিয়ে দেওয়া। কিন্তু দলিল পেয়ে জমি পেতে তারা ৪ বছর ধরে অনেক কষ্ট করছেন। আমরা আশা করি উপজেলা ভূমি অফিস তাদের জমি খুব তাড়াতাড়ি বুঝিয়ে দেবেন। কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চান কোন মানুষ ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনজুর আহসান বলেন, ৩টি ভূমিহীন পরিবারকে কিভাবে তাদের জমি বুঝিয়ে দেওয়া যায় এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।