স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের আমবাড়ীয়া গ্রামে যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রী ও সন্তানকে তাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে আফজাল হোসেন জনি নামের এক নৌ-পরিবহন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে আফজাল হোসেন জনি’র স্ত্রী এইচ আই নওরীন ১১ সেপ্টেম্বর বিআইডব্লিউটিএ, চাঁদপুর নৌ-সওপ, মধ্য ব-দ্বীপ শাখার যুগ্ম পরিচালক বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই কর্মকর্তাকে শিগগিরই বিষয়টি সমাধান করতে বলা হয়েছে। এইচ আই নওরীন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার দড়িয়াপুর গ্রামের সফিকুল ইসলামের কন্যা।
অভিযোগে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১২ মার্চ জনির সাথে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেনমোহরে রেজিস্ট্রারি কাবিনমুলে বিয়ে হয় নওরীনের। বিয়ের বছরখানেক সুখে শান্তিতে কাটলেও এরপর থেকে যৌতুকের টাকার জন্য তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে আফজাল হোসেন জনি। এরই মধ্যে তার কোলজুড়ে ছেলে সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। যার বর্তমান বয়স আড়াই বছর। কিন্তু জনি তাকে চাকরি নেয়ার সময় উৎকোচ দিয়ে নিয়েছে, এর ঋণ পরিশোধে নওরীনকে তার পিতার বাড়ি থেকে ১০ লাখ টাকা এনে দিতে বলে। প্রথমে অপারগতা প্রকাশ করলেও নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে পিতার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা এনে দেয়। এ ছাড়াও নওরীনের ব্যক্তিগত সাড়ে চার ভরি স্বর্ণালংকারও বিক্রি করে ফেলে জনি। এরপরও সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে সংসার করতে থাকেন নওরীন। কিন্তু জনির দাবিকৃত অবশিষ্ট টাকা এনে না দেয়ায় গত ২৮ জুন এক কাপড়ে স্ত্রীকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় জনি। বর্তমানে নওরীন পিত্রালয়েই অবস্থান করছেন।
নওরীন জানান, তিনি ধারণা করছেন, তার স্বামী পরকীয়া প্রেমে আসক্ত এবং গোপনে বিয়ে করে ফেলেছেন। যে কারণে সে তার সন্তানের খোঁজ খবর না নিয়ে উল্টো তার বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করে। এর আগে তিনি জনি ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মাধবপুর থানায় অভিযোগ করলে তারা থানায় মুচলেকা প্রদান করেন। কিন্তু তারা এর কোনো সমাধান দিচ্ছেন না। নওরীন কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ নৌ-সওপ বিভাগ, মধ্য ব-দ্বীপ শাখার যুগ্ম পরিচালক মোঃ আব্দুল্লাহ আল-বাক্বীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মার্ক ম্যান কর্মকর্তা আফজাল হোসেন জনির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়ে তাকে মৌখিকভাবে ১৫ দিনের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করেছি। এর ভেতর পুরো বিষয় সমাধান না করতে পারলে তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় ধারা মোতাবেক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।