হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি অজয় চন্দ্র দেবসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ এবং বিএনপি নেতাকর্মীসহ আহত শতাধিক ॥ জি কে গউছের দাবি তাদের দুইশত নেতাকর্মী আহত হয়েছেন, বিএনপি নেতা আউয়ালের অবস্থা আশঙ্কাজনক ॥ পুলিশের মুখপাত্র পলাশ রঞ্জন দে বললেন বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের উপর অতর্কিত ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ তা প্রতিহত করে
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগরে পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের দফায় দফায় ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। থেমে থেমে কয়েক ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি অজয় চন্দ্র দেব, বেশ কয়েকজন পুলিশ এবং বিএনপি নেতাকর্মীসহ শতাধিক আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েকশ’ রাউন্ড রাবার বুলেট, টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষস্থল থেকে অন্তত ১৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। পরিস্থিতি বেগতিক হলে পুলিশ রায়টকার এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক পদত্যাগী মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছ সাংবাদিকদের জানান, শনিবার বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। শান্তিপূর্ণভাবে নেতাকর্মীরা মিছিল প্রায় শেষ করে দলীয় কার্যালয়ের সামনে পৌছলে পুলিশ অতর্কিত হামলা চালায়। জি কে গউছ দাবি করেন বিএনপির কর্মসূচিতে কোন উত্তেজনা ছিল না। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খলিলুর রহমান আকষ্মিক পুলিশকে গুলি ছোড়ার নির্দেশ দেন। সাথে সাথে পুলিশ দফায় দফায় গুলি ছুড়তে থাকে। এমনকি পুলিশ আমার বাসায় এসেও গুলি ছুড়েছে। আমাদের দুই শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ রঞ্জন দে সাংবাদিকদের জানান, বিএনপির কর্মসূচি চলাকালে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের উপর অতর্কিত ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে আমাদের সদর থানার ওসিসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরবর্তীতে পুলিশ তাদের প্রতিহত করে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার বিকেল ৫টায় হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি শায়েস্তানগর এলাকা থেকে মিছিল বের করে। মিছিলটি শায়েস্তানগর পয়েন্ট হয়ে ঈদগাহ রোড ঘুরে পুনরায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে পৌছে। এ সময় নেতাকর্মীরা নানা শ্লোগান দিতে থাকে। তখন পুলিশ বাঁধা দেয়। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে সংঘর্ষ বাঁধে। দলীয় নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশও পাল্টা কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। দফায় দফায় চলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ। এতে সদর থানার ওসি অজয় চন্দ্র দেব আহত হন। তাকে হবিগঞ্জ আড়াইশ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হন হবিগঞ্জ পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এসএম আওয়ালসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী।