নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ আজমিরীগঞ্জ পৌরসভাধীন এবিসি পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের হোস্টেলের জায়গা দখলের পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে এলাকার একাধিক লোক। গতকাল শনিবার সকাল ১১টায় ওই বিদ্যালয়ের হলরুমে প্রধান শিক্ষক কর্তৃক আয়োজিত ভূঁয়া কাগজপত্র দাখিল করে জায়গা দখলকারীদের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় বিদ্যালয়ের যাবতীয় স্থাবর অস্থাবর জায়গা সম্পদ রক্ষার্থে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।
সূত্র জানায়, আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় ১৯৩০ ইং সনের পূর্বে শুধুমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল। এলাকার লোকজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠ সমাপ্তির পর মাধ্যমিক বিদ্যালয় না থাকায় শিক্ষা সমাপ্তি করতে হত প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত। এ বিষয়টি বিবেচনায় এনে ১নং আজমিরীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বিরাট গ্রামের বাসিন্দা ও সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি বীরচরণ রায় ব্রিটিশ শাসনামলে অর্থাৎ ১৯৩০ইং সনে প্রতিষ্ঠা করেন- আজমিরীগঞ্জ এমালগেমিটেড বীরচরণ হাইস্কুল। সংক্ষেপে বিদ্যালয়টি এবিসি হাইস্কুল নামে পরিচিত। একই সময় হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ, সুনামগঞ্জের শাল্লা, কিশোরগঞ্জের ইটনা মিটামইন ও নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলা থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ সমাপ্তি করে আসা শিক্ষার্থীদের আজমিরীগঞ্জ এবিসি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতো তাদের অভিভাবকগণ। বর্তমান সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী, নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলার কৃষ্ণপুরের বাসিন্দা মোঃ আব্দুল জব্বার ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। অপরদিকে পাশের বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষার্থীদের থাকা খাওয়ার জন্য উক্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের অপরপাড়ে তৎকালীন জমিদার ও এমএলএ কালীপ্রসন্ন চৌধুরী “দাস হোস্টেল” প্রতিষ্ঠা করেন। সময়ের বিবর্তনে কুশিয়ারার শাখানদীতে সবকিছু বিলীন হলেও একটি পাকা টয়লেট এখনও দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে। বর্তমানে কয়েক বছর ধরে একাধিক ভূমিদস্যুর দৃষ্টি পড়ে ওই হোস্টেলের জায়গার উপর। তারা জালদলিল তৈরি করে জায়গাটি দখল করার পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে। ২০২২ ইং সনের শেষের দিকে তারা বাঁশের বেড়া দিয়ে নিজদের দখলে নেয়ার চেষ্টা করে। ওই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দখল ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়। সম্প্রতি আবারও ওই চক্রের সদস্যরা জাল দলিলের মাধ্যমে ওই জায়গা নিজেদের দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। এরই প্রেক্ষিতে গতকাল শনিবার সকাল ১১ টায় সহশিক্ষক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় প্রধান শিক্ষক সুখন সূত্রধরের উদ্যোগে ও সভাপতিত্বে বিদ্যালয়ের হলরুমে একটি প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত প্রতিবাদ সভায় উপজেলার রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন। সভায় বিদ্যালয়ের স্থাবর অস্থাবর জায়গা সম্পদ রক্ষার্থে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির নেতৃবৃন্দ হলেন- সভাপতি মিজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি) , সহ-সভাপতি আলাউদ্দিন (সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান), সদস্য সচিব মমিনুর রহমান, সজিব (উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান) সহসদস্য সচিব, আশরাফুল হোসেন, মোবারুল (সদর ইউপি চেয়ারম্যান) সম্মানিত সদস্য, তৈয়বুর রহমান খাঁন, বাচ্চু, অ্যাডভোকেট ফেরদৌস, মনোয়ার আলী, মঞ্জু কান্তি রায়, তফসির মিয়া, খালেকুজ্জামান, সামায়ূন চৌধুরী, জাহাঙ্গীর আলম, স্বাধীন মিয়া, আক্তার হোসেন, মিজানুর রহমান, মিজান, জসিম উদ্দিন, লেচু মিয়া, আলী মিয়া, প্রমূখ।