অভিযোগের ভিত্তিতে রাস্তাটি সরজমিনে পরিদর্শন করেন এমপি মজিদ খান
বানিয়াচং প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কের জরুরী সংস্কার কাজ চলছে। ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সংস্কার কাজের গতি, কাজের মান ও বরাদ্দকৃত বাজেট নিয়ে সাধারণ মানষের মাঝে কৌতুহল ও কানাঘুষা শুরু হয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বেসরকারি সদস্যদের বিল ও বেসরকারি সদস্যদের প্রস্তাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি শনিবার রাস্তাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এসময় হবিগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল, উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদ্মাসন সিংহ সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
সূত্রে জানা যায়, বানিয়াচং-হবিগঞ্জ সড়কে পিরিয়ডিক মেইনটেনেন্স প্রোগ্রাম (মেজর) প্রজেক্টের মাধ্যমে ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তার মেরামত কাজ শুরু করা হয় চলতি বছরের ৪ জুন। সংস্কার কাজটি সমাপ্ত হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৪ সালের মার্চ মাসে। ২২ কোটি টাকার সংস্কার কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মোস্তফা কামাল ও জামান এন্টারপ্রাইজ।
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কটির কালারডোবা নামক অংশে প্রায় হাফ কিলোমিটার রাস্তা উপরের অংশ ভেঙ্গে রাখা হয়েছে দীর্ঘদিন যাবৎ। রাস্তায় মাঝেমধ্যে কিছু অংশের গাইডওয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও আবার বাঁশের খুটি পুতে দেওয়া হচ্ছে। কোন কোন অংশে এজিন বসানো হচ্ছে। আবার কোথাও এজিন বসানো হচ্ছে না। কোথাও মাটি দেওয়া হচ্ছে আবার কোথাও মাটি দেওয়া হচ্ছে না। বিচ্ছিন্নভাবে গর্ত করে রেখে দেওয়া হচ্ছে, কিছুদিন পর গর্ত ভরাট করে আবার ফেলে রাখা হচ্ছে। কিন্তু পূর্ণাঙ্গভাবে কাজ সমাপ্ত না করায় জনমনে এ নিয়ে নানা প্রশ্ন ও কৌতুহল তৈরি হয়েছে। বিচ্ছিন্নভাবে কাজের শুরু হলেও শেষ না হওয়ায় সন্দেহ সংশয় থেকে কানাঘুষা শুরু হয়েছে। মানুষজন বলাবলি করছেন ২২ কোটি টাকা কি তবে এভাবেই লোপাট হচ্ছে?
বিষয়টি বানিয়াচং উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা সহ বিভিন্ন ফোরামে বিভিন্নজন উত্থাপন করে কোন সুরাহা পাচ্ছিলেন না। রাস্তার এই কাজের ব্যাপারে স্থানীয় এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খানকে অনেকেই অবহিত করছিলেন। সংসদ সদস্য সকল অভিযোগ ও প্রশ্নের উত্তর নিজে জানতে এবং মানুষকে জানাতে নির্বাহী প্রকৌশলী সহ রাস্তা পরিদর্শনে আসেন। পরিদর্শন শেষে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে স্থানীয় সাংবাদিক ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে জানান- এটি একটি সময় সাপেক্ষ জরুরী মেরামত কাজ। মাত্র ৩ কিলোমিটার রাস্তার পুরো সংস্কার করা হবে বিভিন্ন স্পটে। সিলকোট করা হবে পুরো ১৮ কিলোমিটার রাস্তার। এ বিষয়টি সবাইকে বুঝতে হবে।
এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান বলেন- রাস্তার মেরামত কাজের তদারকি করার জন্য ডিপার্টমেন্টালি লোক রয়েছে। এগুলো তারাই দেখবেন। এছাড়া স্থানীয় প্রশাসন তো রয়েছেই। তবে কাজ নিয়ে জনমনে যেন বিভ্রান্তি তৈরি না হয় সেজন্য আমি নিজে রাস্তাটি পরিদর্শন করে এসেছি। আশা করছি বিধি মোতাবেক রাস্তার কাজ শেষ হবে।
মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আমীন, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কাজী নজরুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান শেখ মিজান, পিআইও মলয় কুমার দাস, বানিয়াচং প্রেসক্লাব সভাপতি মোশাহেদ মিয়া, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম চৌধুরী রিপন, সাংবাদিক নূরুল ইসলাম, ইউপি সদস্য নাসিরুদ্দিন চৌধুরী, ছাত্রনেতা কাউসার আহমেদ শিহাব প্রমুখ।