মেয়র প্রার্থী আবুল কাশেম শিবলু’র বার্ষিক আয় ৩২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ॥ তাঁর ব্যাংক ঋণ ৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা
ইমদাদুল ইসলাম শীতল ব্যবসা থেকে বছরে আয় করেন ৬০ হাজার টাকা
এসএম সুরুজ আলী ॥ যতই দিন ঘনিয়ে আসছে ততই শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা জমে উঠছে। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা উঠান বৈঠকসহ ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করে ব্যস্ত সময় পারছেন। গতকাল শুক্রবার মেয়র কাউন্সিলর প্রার্থীরা জুম্মার নামাজ আদায় করে মসজিদে মসজিদে মিলাদ ও দোয়া কামনা করেন। পরবর্তীতে প্রচারণায় নেমে যান।
নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদেরকে নিজেদের আয়-ব্যয় সম্পদের বিবরণ ও শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ বিস্তারিত তথ্য নির্বাচন কমিশনে দাখিল করতে হয়েছে। প্রত্যেক প্রার্থী নোটারী পাবলিকে হলফনামায় মাধ্যমে নিজেদের যেসব তথ্য নির্বাচন কমিশনে দাখিল করেছেন তা দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ পত্রিকার পাঠকদের উদ্দেশ্যে ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। গতকাল তুলে ধরা হয়েছিল আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মোঃ মাসুদউজ্জামান মাসুক ও বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী সাবেক মেয়র এফ এম আহমেদ অলির হলফনামার তথ্য। আজ তুলে ধরা হলো স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী শায়েস্তাগঞ্জ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম শিবলু ও ইমদাদুল ইসলাম শীতল এর হলফনামার তথ্য।
আবুল কাশেম শিবলু ঃ আবুল কাশেম শিবলু শায়েস্তাগঞ্জ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও আওয়ামীলীগ নেতা। তিনি শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের তাপাসী মহল্লার মৃত আব্দুস সাত্তার মুন্সী ও হরফ চাঁন বানুর ছেলে। হলফনামায় তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস উল্লেখ করেছেন। তার বিরুদ্ধে অতীতে কোন মামলা ছিল না। বর্তমান সময়ে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার একটি মামলা ছিল। তিনি এ মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। ব্যবসায়ী হিসেবে তিনি হার্ডওয়্যার, রড সিমেন্ট, ইলেকট্রিক পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতা। তার বার্ষিক আয় ৩২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এ হিসেবে তাঁর মাসিক আয় ২ লাখ ৭৩ হাজার ৩৩৩ টাকা। তার আয়ের উৎসগুলোর মধ্যে কৃষিখাত থেকে বার্ষিক ১ লাখ টাকা, বাড়ি/এপার্টমেন্ট/দোকানসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ভাড়া থেকে ১১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে ২০ লাখ ১০ হাজার টাকা। তার পরিবারের নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা। তার কাছে নগদ রয়েছে ২লাখ টাকা, ব্যাংকে জমা ৩৮ হাজার ৯৬৭ টাকা। তার রয়েছে ১টি মিনি ট্রাক, ১টি মোটর সাইকেল, বাসায় ২টি মোবাইল, ফ্রিজ ২টি, ল্যাপটপ ২টি, টিভি ২টি, এসি ৩টি, ফ্যান ১০টি। এছাড়াও আসবাবপত্র রয়েছে। স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নিজ নামে ১০১ শতক কৃষি জমি, অকৃষি জমি রয়েছে ৭১.৭৫ শতক। তার স্ত্রীর রয়েছে ৫ শতক অকৃষি জমি। তাদের যৌথ মালিকানায় রয়েছে কৃষি ৪৯৪ শতক, অকৃষি ২৩৬.১শতক ও ৬টি দালান, আবাসিক/বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ৬টি। যৌথ মালিকানার ক্ষেত্রে তিনি ১/২অংশের মালিক। তবে তার বিভিন্ন ব্যাংকে ঋণ রয়েছে ৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এর মধ্যে তার নিজ নামে ইসলামী ব্যাংকে ৮ কোটি টাকা, আইডিএলসি ফাইনান্স লিঃ হবিগঞ্জ শাখায় ব্যবসায়িক ঋণ ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা ও তার স্ত্রী শামীমা আক্তার এর নামে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ শায়েস্তাগঞ্জ এসএমই শাখায় সিসি ব্যবসায়িক ঋণ ৩০ লাখ টাকা।
ইমদাদুল ইসলাম শীতল ঃ ইমদাদুল ইসলাম শীতল আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তিনি এখন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী। তিনি শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার লেঞ্জাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম ও জুলেখা বেগমের ছেলে। তিনি হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছে ¯œাতক। বর্তমানে তার নামে কোন মামলা নেই। অতীতে একটি মামলা ছিল সেই মামলা থেকে তিনি খালাস পেয়েছেন। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী হিসেবে বার্ষিক আয় ৬০ হাজার টাকা উল্লেখ করেছেন। এ হিসেবে তার মাসিক আয় ৫ হাজার টাকা। তার পরিবারের উপর নির্ভরশীলদের আয় ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। তার নিজের হাতে নগদ রয়েছে ৪৫ হাজার টাকা, ব্যাংকে জমা ১ হাজার টাকা। তার রয়েছে ৩ ভরি স্বর্ণালংকার। তবে নিজের নামে কোন জায়গা নেই। নির্ভরশীলের নামে কৃষি জমি রয়েছে ৩২ শতক ও অকৃষি ৯শতক জায়গা রয়েছে। এছাড়াও পরিবারে ব্যবহারের আসবাবপত্র রয়েছে।