মনিরুল ইসলাম শামিম ॥ চা-বাগানগুলোতে এখন প্রুনিং শুরু হয়েছে। গাছের সুরক্ষার জন্য পর্যায়ক্রমে দু’তিন বছর পরপর প্রুনিং করা হয়। প্রুনিংয়ের বাংলা ছাঁটাই। তবে কেউ কেউ এটাকে কলম করা বলে। এতে করে সব চা-বাগানগুলোই সময়ের ব্যবধানে হয়ে উঠবে রুক্ষ। থাকবে না সবুজের পাতা। চা গাছগুলো উপরের পাতা ও ডালগুলো কেটে ফেলা হবে। এতে সবুজহীন হয়ে গাছগুলো হবে ধূসর। প্রতিটি চা গাছ হরিণের শিংয়ের মতো খাঁড়া খাঁড়া ডালে পরিণত হবে। টিলার পর টিলা চা গাছগুলো ন্যাড়া ভঙ্গিমায় ওভাবেই ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকবে।
গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টায় বাহুবল উপজেলার বৃন্দাবন চা বাগানে দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে প্রুনিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বাগানের ব্যবস্থাপক নাসির উদ্দিন খাঁন এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাগানের সহ-ব্যবস্থাপক উজ্জল সিনহা, সাজ্জাদুর রহমান, আব্দুস শহিদ, প্রভাষক মোঃ আলাউদ্দিন, হেড টিলা ক্লার্ক বিজন ভট্টাচার্য্য, স্টোর ক্লার্ক সালেহ আহমেদ সাগর, ইমাম আবুল হোসেন ও শামিম আহমেদ প্রমুখ।
উদ্বোধন শেষে তিনি বলেন, প্রতি বছর এই সময়কালেই শুরু হয় চা গাছের প্রুনিং কার্যক্রম। এতে করে চা-গাছের পছন্দসই আকৃতির জন্ম হয়। এর উদ্দেশ্য চা-গাছের দৈহিক বৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণ করা।
তিনি আরও বলেন, প্রুনিংয়ের প্রকারভেদ আছে। কোন সেকশনের চা গাছগুলোতে কোন ধরনের প্রুনিং হবে তা সেকশন ভিত্তিক প্লাকিং-টেবিল (Plucking Table) তালিকা পর্যবেক্ষণ করে আমরা সিদ্ধান্ত নেই। যত আগে প্রুনিং করা হয় তত আগেই পাতা চয়ন (Plucking) শুরু হয়।
তিনি আরও বলেন, গলাকাটা ছাঁটাই (Collar Prune), মধ্যম ছাঁটাই (Medium Prune), হালকা ছাঁটাই (Light Prune) মূলত এই তিনটি ছাঁটাই রয়েছে। এছাড়া আরও কিছু ছাঁটাই পদ্ধতি রয়েছে। আসলে এগুলো নির্ভর করে চা-গাছের বয়স এবং উৎপাদন ক্ষমতার উপর। চা-বাগানের একেক সেকশনের চা গাছের বয়স কিন্তু একেক রকম। কোনোটা ৫ থেকে ১০ বছর। আবার কোনোটা ২০ থেকে ৫০ বছর পর্যন্ত রয়েছে। বয়সের উপর ভিত্তি করে প্রুনিংয়ের কাটার গভীরতা নির্ভর করে। তবে ৬০ বছর হয়ে গেলে চা গাছ তার উৎপাদন ক্ষমতা হারায়। তখন পুরাতন চা গাছ তুলে নতুন চারা রোপণ করতে হয়।