ধর্ষণ মামলার আরেক আসামী সেনাবাহিনীর সৈনিক বিশ্বজিত ভৌমিকের ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে
চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতারকৃত বিমান বাহিনীর সদস্য খোকন ভৌমিককে (২৫) আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাকে ঢাকার বিমান বাহিনীর কুর্মিটোলা ঘাটি থেকে চুনারুঘাট থানায় নিয়ে আসা হয়। তিনি উপজেলার নালুয়া চা বাগানের মৃত নিবারণ ভৌমিকের ছেলে। এ মামলায় অপর আসামী বিশ্বজিত ভৌমিকের বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ এম আলী আশরাফ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চুনারুঘাট থানার এসআই আলী আজহার জানান, খোকন বিমান বাহিনীর এলএসএ পদে চাকুরিরত। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় সোমবার বিমান বাহিনী কর্তৃপক্ষকে আসামী হস্তান্তরের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়। এ প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে খোকনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
গতকাল বুধবার সার্কেল এএসপি মোঃ নাজিম উদ্দিন ও চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ আলী আশরাফ তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছেন। একই সাথে তাকে রিমান্ডে নেওয়ার জন্য পুলিশ ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করবে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আলী আজহার।
চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আলী আশরাফ বলেন, ধর্ষণের অভিযোগ তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় বিমান বাহিনী খোকনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। মামলার অপর আসামী সেনাবাহিনীর সদস্য বিশ্বজিত ভৌমিকের ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার নালুয়া চা বাগানের এক আদিবাসী স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর বোন বাদী হয়ে ২০ সেপ্টেম্বর চুনারুঘাট থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় একই বাগানের মৃত নিবারণ ভৌমিকের ছেলে বিমান বাহিনীতে সৈনিক পদে কর্মরত খোকন ভৌমিক (২৫) ও মৃত সাগর ভৌমিকের ছেলে সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে কর্মরত বিশ্বজিৎ ভৌমিককে (২৪) আসামী করা হয়।
মামলায় বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় ধর্ষণের শিকার মৌলভীবাজার কুলাউড়া ক্যামেলী ডানকান ফাউন্ডেশন স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী নালুয়া চা বাগানে তার বাবার বাড়িতে চলে আসে। ১১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেলে খোকন স্কুল ছাত্রীকে হোম ওয়ার্ক করানোর কথা বলে একই বাগানের খোকনের ঘরে নিয়ে যায়। বাড়িতে কোনো লোকজন না থাকায় খোকন ভৌমিক তার বন্ধু বিশ্বজিৎ ভৌমিকের সহযোগিতায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে। ধর্ষিতা স্কুলছাত্রী লোকলজ্জা ও ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখে। পরে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে তার বড় বোন লাকীকে ধর্ষণের বিষয়টি খুলে বলে। ১৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার তাকে হবিগঞ্জ আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সেখানে তার মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।