এসএম সুরুজ আলী \ আজ ১৪ নভেম্বর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম চীফ অব স্টাফ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের উপ-সর্বাধিনায়ক মেজর জেনারেল (অবঃ) মোহাম্মদ আব্দুর রব বীরউত্তম এর ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। স্বাধীনতা যুদ্ধের এই মহান সৈনিক ১৯৭৫ সালের ১৪ নভেম্বর ৫৬ বছর বয়সে রক্তশূন্যতাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর পর তাকে হবিগঞ্জ শহরের উপকণ্ঠে খোয়াই নদীর তীরে উমেদনগরে দাফন করা হয়।
মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আব্দুর রব ১৯১৯ সালে বানিয়াচং উপজেলার খাগাউড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩৯ সালে সিলেট এমসি কলেজ হতে স্নাতক ডিগ্রী এবং পরবর্তীতে ভারতের আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমএ ডিগ্রী লাভ করার পর তদানীন্তন ব্রিটিশ-ভারত সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৪৪ সালে কমিশন লাভের পর ২য় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে বার্মা, মালয়, সুমাত্রা, জাভা এবং পরবর্তীকালে কাশ্মীর সীমান্তে যুদ্ধ ও প্রতিরক্ষায় সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন শেষে ১৯৭০ সালে অবসর গ্রহণের পর রাজনীতিতে যোগ দেন। একই বছরে তিনি বানিয়াচঙ্গ-নবীগঞ্জ-আজমিরীগঞ্জ এলাকা থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে এপ্রিল মাসে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠিত হবার পর তিনি সেনাবাহিনীর চীফ অব স্টাফ পদে নিযুক্ত হন। মুক্তিযুদ্ধের পর সরকার তাকে অসাধারণ শৌর্য-বীর্যের জন্য বীরউত্তম খেতাব প্রদান করে। ১৯৭২ সালের ৭ এপ্রিল পর্যন্ত তিনি সেনাবাহিনীর চীফ অব স্টাফ পদে বহাল ছিলেন। অবসরগ্রহণ তালিকা সংশোধনের পর তাকে অবৈতনিক মেজর জেনারেল পদমর্যাদা দান করা হয়। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে তিনি সফলভাবে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন ও পরিচালনা করেন। তিনি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের প্রথম ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অবিবাহিত ছিলেন।
এম এ রব এর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শনিবার পারিবারিকভাবে কবর জিয়ারত, কোরআনখানী এবং খাগাউড়া গ্রামের বাড়িতে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে হবিগঞ্জ এম এ রব স্মৃতি সংসদ।