দুবাই জর্ডান ও কাতার ৩ দেশে প্রায় ১০ বছর কাজ করে স্বামীর কাছে ২৯ লাখ টাকা পাঠায় স্ত্রী আজিদা
মাধবপুর প্রতিনিধি ॥ মাধবপুরে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন করার ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের আয়লাবই গ্রামে।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ধর্মঘর ইউনিয়নের আয়লাবই গ্রামের মৃত মস্তু মিয়ার ছেলে মোঃ মতি মিয়া ধর্মীয় বিধান মতে বিয়ে করেন আয়লাবই গ্রামের মৃত আব্দুল মন্নাফ মিয়ার মেয়ে মোছাঃ আজিদা বেগমকে। বিয়ের পর ভালভাবেই সংসার চলছিল। বিয়ের কিছুদিন পর আজিদা বেগমকে তার স্বামী মতি মিয়া গৃহকর্মীর কাজ দিয়ে দুবাই পাঠিয়ে দেয়। দুবাইয়ে ৫ বছর থেকে আজিদা বেগম দেশে আসেন। দুবাই থাকার সময় সব টাকা স্বামীর নিকট প্রেরণ করেন।
দেশে আসার পর তাদের দুটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। ছোট মেয়ের বয়স যখন ৯ মাস তখন তার স্বামী তাকে গৃহকর্মীর কাজ দিয়ে পুনরায় জর্ডান পাঠিয়ে দেয়। সেখানে আজিদা ২ বছর থাকে এবং উপার্জিত টাকা স্বামীর কাছে প্রেরণ করে। ২ বছর পর আজিদা দেশে ফিরে আসলে তার স্বামী মতি মিয়া তাকে পুনরায় গৃহকর্মীর কাজ দিয়ে কাতার পাঠান। সেখানে আজিদা ৩ বছর যাবত কাজ করে উপার্জিত টাকা স্বামীর কাছে প্রেরণ করে। ৩ বছর পর আজিদা দেশে ফিরে আসে। স্ত্রীকে বিদেশে রেখে মতি মিয়া দেশে আরেকটি বিয়ে করে।
এদিকে, দুবাই, জর্ডান ও কাতার ৩ দেশ মিলিয়ে প্রায় ১০ বছর আজিদা বেগম বিদেশে গৃহকর্মীর কাজ করে স্বামীকে ২৯ লাখ টাকা দেয়। দেশে ফিরে আসার পর আরো টাকা দেয়ার জন্য মতি মিয়া আজিদার উপর নির্যাতন শুরু করে। এই নিয়ে স্বামীর সঙ্গে আজিদার পারিবারিক বিরোধ দেখা দিলে স্থানীয় লোকজন সালিশের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করে দেন।
স্থানীয়দের সিদ্ধান্তমতে স্বামীর বাড়িতে আলাদা গৃহনির্মাণ করে ২ মেয়েকে নিয়ে বসবাস করতে থাকে আজিদা। তখনো স্বামী মতি মিয়া ২ লাখ টাকা দিতে আজিদা বেগমকে চাপ দিতে থাকে। আজিদা বেগম টাকা দিতে অস্বীকার করলে গত ১০ অক্টোবর সকালে মতি মিয়া ও তার অপর স্ত্রী ছায়েদা বেগম মিলে আজিদা বেগমকে মারপিট করে আহত করে।
এ ঘটনায় আজিদা বেগম গত ১২ অক্টোবর হবিগঞ্জ নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এ মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে মাধবপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে তদন্তক্রমে প্রতিবেদন দাখিল করতে আদেশ দেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবু আসাদ ফরিদুল হক জানান, তদন্ত করে বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।