স্টাফ রিপোর্টার ॥ সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বললেন, জাতীয় সংসদে যেদিন হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয় সেদিন আমিও সংসদে ছিলাম। সেখানে যে আইন হয়েছে তাতে বলা হয়েছে হবিগঞ্জ জেলা সদরে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হবে। এখন কেউ চাইলেও অন্য কোথাও হওয়া সম্ভব নয়। জেলা সদরে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অবদান হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহিরের। জেলা সদরে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এনে দেয়ায় এমপি আবু জাহিরের প্রতি হবিগঞ্জবাসীর আজীবন কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে হবিগঞ্জ পৌর মিলনায়তনে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু পরিষদ হবিগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল খায়েরসহ করোনাকালীন সময়ে আওয়ামী পরিবারের নেতৃবৃন্দের মৃত্যুতে আয়োজিত শোক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যখন কেউ খারাপ কাজ করে তখন এটি ছাত্রলীগ করেছে বলে প্রচার করা হয়। কিন্তু সিলেটে ধর্ষণের ঘটনায় যার কারণে ভিকটিম সহযোগিতা পেয়েছে সে যে ছাত্রলীগের সেটি কেউ প্রচার করে না। করোনার সময় যখন স্বজনরা লাশ দাফন করছিল না তখন ছাত্রলীগ সেই লাশ দাফন করেছে। তাও প্রচার হয় না। ছাত্রলীগের সবাই ভাল। যারা খারাপ তাদের সংখ্যা খুবই নগন্য। প্রত্যেক এলাকার নেতাকর্র্মীদের এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেন- করোনাকালে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জনগণের পাশে থেকে কাজ করেছেন। এই সময়ে দেশের অনেক গুণিজনকে আমরা হারিয়েছি। এই হারানোর বেদনায় আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ভেঙ্গে পড়েছিলেন। কিন্তু তিনি সঠিকভাবে হাল ধরায় আল্লাহর রহমতে আমরা আরও বড় ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছি। এই সময়ে হবিগঞ্জেও অনেক বরেণ্য মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তবে হবিগঞ্জের মত দেশের আর কোথাও এত বরেণ্য মানুষের মৃত্যু হয়নি। প্রতিটি মৃত্যুই কষ্টের। যারা স্বজন হারিয়েছেন আমরা তাদের প্রতি সমব্যাথি। তবে এখন আর মৃত্যু হবে না তা ভাবলে চলবে না। এখন চলছে করোনার দ্বিতীয় ওয়েব। মনে রাখতে হবে জীবন খুবই মূল্যবান। তরুণ ও যুবকদেরকে বাঁচতে হবে। তারাই আগামী দিনে দেশ পরিচালনা করবে। এর জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। স্বাস্থ্য বিধি মানতে হবে। মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে।
কে এম খালিদ বলেন, হবিগঞ্জে অনেক বরেণ্য ব্যাক্তি রয়েছে। অনেকেই একুশে পদকসহ জাতীয় সম্মাননা পেয়েছেন। হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির এমপি মরহুম মোস্তফা আলীকে একুশে পদক বা জাতীয় সম্মাননা পাওয়ার জন্য উদ্যোগ নেয়ার কথা বলেছেন। আমরা মনে করি তিনি এই সম্মাননা পাওয়ার যোগ্য।
জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির এমপির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আলমগীর চৌধুরীর সঞ্চালনায় শোক সভায় উপস্থিত ছিলেন এবং আলোচনায় অংশ নেন, আওয়ামী লীগ জাতীয় কমিটির সাবেক সদস্য শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মনোয়ার আলী, ডা. অসিত রঞ্জন দাস, অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান তালুকদার, আতাউর রহমান সেলিম, অ্যাডভোকেট নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্থ টিটো, মেয়র মিজানুর রহমান মিজান, অ্যাডভোকেট সুলতান মাহমুদ, মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, অ্যাডভোকেট প্রবাল কুমার মোদক, রফিক আহম্মেদ, অ্যাডভোকেট আফিল উদ্দিন, অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির সৈকত, অ্যাডভোকেট রুহুল হাসান শরীফ, অ্যাডভোকেট সৈয়দ আফজাল আলী দুদু, অ্যাডভোকেট শাহ ফখরুজ্জামান, তজম্মুল হোসেন, অ্যাডভোকেট আব্দুল মুনতাকিম চৌধুরী খোকন, অ্যাডভোকেট সুবীর রায়, রাসেল চৌধুরী, স্বপন লাল বণিক, হাবিবুর রহমান খান, ডা. ইসতিয়াক রাজ চৌধুরী ও ফয়জুর রহমান রবিন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির এমপি বলেন, হবিগঞ্জের আওয়ামী পরিবারের কেউ এমন কাজ করেনি যার জন্য সংগঠন ও এলাকার দুর্নাম হয়। ভবিষ্যতে যাতে এই ধারা অব্যাহত থাকে সেদিকে নজর দিতে হবে। কেউ যাতে দলকে সমালোচনার মুখে না ফেলতে পারে তার জন্য সকল নেতাকর্মীকে সজাগ থাকতে হবে।
তিনি করোনাকালে মৃত্যুবরণকারী নেতাকর্মীদের স্মৃতিচারণ করে বলেন তাদের মৃত্যু আমাদের দলের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। বিশেষ করে অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের সর্বজন শ্রদ্ধেয় ছিলেন। তার মৃত্যুতে শুধু আওয়ামী লীগই নয়, হবিগঞ্জের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। অন্য যাদেরকে হারিয়েছি তারাও বিভিন্ন ক্ষেত্রে দলকে সুসংগঠিত করতে বলিষ্ট ভূমিকা রেখেছিলেন।
করোনাকালে হবিগঞ্জে বঙ্গবন্ধু পরিষদ সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের ছাড়াও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট জীতেন্দ্র দেব, অ্যাডভোকেট আলাউদ্দিন তালুকদার, অ্যাডভোকেট সাদেক মিয়া, তৌফিকুল আলম চৌধুরী ও শহীদ উদ্দিন আহমেদ জিসনু মারা গেছেন।