স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে নববধূকে ধর্ষণ করার কথা আদালতে স্বীকার করেছে শায়েস্তাগঞ্জের শাহ মাহবুবুর রহমান রনিসহ আরো তিন আসামী। গতকাল যারা ধর্ষণের অপরাধ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তারা হলেন শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি, আইনুল ইসলাম ও রাজন আহমদ। জবানবন্দী শেষে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এ নিয়ে চাঞ্চল্যকর এ মামলায় মোট ছয় আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গতকাল শনিবার দুপুর ১টার দিকে কড়া নিরাপত্তায় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) শাহপরাণ থানা পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আসামি শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি, আইনুল ইসলাম ও রাজন আহমদকে আদালতে নিয়ে আসে।
তারপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) আসামিদের ১৬৪ ধরায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক জিয়াদুর রহমানের আদালতে আবেদন করেন। আইন অনুযায়ী বিচারক আসামিদের তিন ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি-প্রসিকিউশন) অমূল্য কুমার চৌধুরী জানান, এরপর বিকেল থেকে আসামিরা জবানবন্দি দিতে শুরু করেন। এর মধ্যে আসামি রাজন আহমদ বিচারক জিয়াদুর রহমানের খাসকামরায় জবানবন্দি দেন। সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-২ সাইফুর রহমানের খাসকামরায় জবানবন্দি দেন আইনুল ইসলাম এবং সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-৩-এর বিচারক শারমিন খানম মিলার খাসকামরায় জবানবন্দি দেন শায়েস্তাগঞ্জের পূর্ব বাগুনিপাড়ার শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি।
এর আগে শুক্রবার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান, ৪ নম্বর আসামি অর্জুন লস্কর ও ৫ নম্বর আসামি রবিউল ইসলাম ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ওইদিনই আদালতের নির্দেশে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় আরো দুই আসামির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন তারেক আহমদ ও মাহফুজুর রহমান মাছুম। দুপুর ১২টায় পুলিশ পাহারায় তাঁদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে আসামিরা তাঁদের নমুনা প্রদান করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, স্বামীকে নিয়ে ঘুরতে গত ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় এমসি কলেজে গিয়েছিলেন এক নববধূ। এ সময় কলেজ ক্যাম্পাস থেকে পাঁচ থেকে ছয়জন তাঁদের জোরপূর্বক কলেজের ছাত্রাবাসে নিয়ে যান। সেখানে একটি কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে গণধর্ষণ করেন তাঁরা। পরে ওই গৃহবধূকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় পরের দিন ওই গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলেন সাইফুর রহমান (২৮), শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), তারেক (২৮), অর্জুন লস্কর (২৫), রবিউল ইসলাম (২৫) ও মাহফুজুর রহমান মাছুম (২৫)। তাঁদের মধ্যে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকার শাহ মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে।