মনিরুল ইসলাম শামিম ॥ বাহুবল সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার পারভেজ আলম চৌধুরীর ঐকান্তিক চেষ্টা ও বলিষ্ট পদক্ষেপে উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের চারগ্রামের (পশ্চিম শাহাপুর, যশপাল, আব্দাপটিয়া, ভৈরবীকোণা) দীর্ঘদিনের বিরোধ নিষ্পত্তি হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় বাহুবল সার্কেল অফিসে দীর্ঘদিন ধরে চলমান ওই বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে একটি সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে এএসপি পারভেজ আলম চৌধুরীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে চারগ্রামের উভয়পক্ষের মরুব্বিরা সকল ভেদাভেদ ভুলে একে ওপরের সাথে কোলাকুলিতে মিলিত হন। এ সময় উভয় পক্ষের মরুব্বিরা আগামি দিনগুলোতে মিলেমিশে চলার অঙ্গীকার করেন।
জানা যায়, দীর্ঘ এক যুগ ধরে উপজেলা ভাদেশ্বর ইউনিয়নের চারগ্রাম নেতা জাহিদুল ইসলাম জিতু ও তাজুল ইসলাম চৌধুরীর মাঝে নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। তাদের বিরোধের জের ধরে চারগ্রামের লোকজন দুই ভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েন। এতে উভয় পক্ষের মাঝে একাধিক বার ভয়াবহ সংঘর্ষ হলে কয়েক শতাধিক আহত লোক আহত হন। ঘটে যাওয়া সংঘর্ষের সূত্রে ধরে উভয় পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে প্রায় ১২টি মামলা করেন। তাদের উভয় পক্ষের লোকজন দীর্ঘদিন হাজতবাস করেছেন। এই বিষয়টি মিমাংসার জন্য উপজেলা ও জেলার বিশিষ্ট মুরুব্বীগণ একাধিকবার বিচার বৈঠকে বসেও নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হন। দীর্ঘদিন ধরে চলমান বিরোধটি ইদানিং ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। থমথমে এ অবস্থা বিরাজ করায় যে কোন সময় ঘটতে পারত এক বা একাধিক প্রাণঘাতি। এমন কঠিন পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিষয়টি চিরতরে নিষ্পত্তির লক্ষ্যে এএসপি পারভেজ আলম চৌধুরী একাধিক বৈঠকে মিলিত হন। সর্বশেষ রবিবার সন্ধ্যায় নিজ কার্যালয়ে উভয় পক্ষকে ঢেকে এনে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে সম্মত হন তিনি। এতে উভয় পক্ষের মাঝে দীর্ঘদিন পর শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ অবস্থা ফিরে আসে।
বাহুবল সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার পারভেজ আলম চৌধুরী বলেন, আমার উদ্যোগে চারগ্রামের দুই পক্ষের দীর্ঘদিনের বিরোধ নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে চলমান চলমান বিরোধের অবসান ঘটল। এখন উভয় পক্ষের লোকজনের মাঝে সৌহার্দ্যপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। তিনি আরও বলেন, আগামি শুক্রবার আব্দাপটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আমি সেখানে উপস্থিত থেকে এলাকার শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য একটি কমিটি গঠন করে দেব। গঠিত কমিটি চারগ্রামের শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে পুলিশ প্রশাসনকে সহায়তা করবে বলেও তিনি জানান।
এ সময় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাহুবল মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আলমগীর কবির, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির চৌধুরী, আটগ্রাম নেতা আকাদ্দছ মিয়া বাবুল, মাওলানা আব্দুল বারি আনছারী, মাওলানা আজিজুর রহমান মানিক, হাজী জমর উদ্দিন, জাহিদুল ইসলাম জিতু, তাজুল ইসলাম চৌধুরী, লামাতাশি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান চৌধুরী টেনু প্রমুখ।