স্টাফ রিপোর্টার ॥ এমসি কলেজে স্বামীকে আটকে রেখে তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের যিনি পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিয়েছেন তিনি এখন হবিগঞ্জসহ সিলেট বিভাগে এমনকি দেশজুড়ে আলোচিত ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন। ধর্ষকদের শনাক্ত ও তাদের আইনের আওতায় আনতে তাঁর সাহসী ভূমিকা ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। তিনি হলেন মিহিত গুহ চৌধুরী বাবলা। তিনি সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক।
তাঁকে নিয়ে অনেকেই অনেক প্রশংসাসূচক কথা লিখেছেন। এর মধ্যে একটি লেখা নি¤œরূপ-
“এই মানুষটাকেও ভাইরাল করুন। সিলেটে স্বামীকে জিম্মি করে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করা ছয়জন ছাত্রলীগের কর্মীকে আপাতত সারা বাংলাদেশ চেনে। এই চেনানোটা জরুরী ছিলো। এবার এই লোকটাকেও চেনানো জরুরী। ছবিতে থাকা মানুষটির নাম মিহিত গুহ চৌধুরী বাবলা। তিনি সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি স্থানীয়ভাবে বাবলা চৌধুরী নামেই পরিচিত।
এই যে সিলেটে ধর্ষণকারীদের নিয়ে সারা দেশে তোলপাড় হচ্ছে সেই ধর্ষকদের বিরুদ্ধে তিনি প্রথম রুখে দাঁড়িয়েছেন। মেয়েটি ও তার স্বামী যখন কাঁদতে কাঁদতে যাচ্ছিল, তাঁর সাথে পথে দেখা, তিনি ঘটনা শুনলেন এবং বললেন এমন জঘন্য ঘটনা মেনে নেয়া যায় না। এদের ছাড় দেয়া উচিত হবে না। বলেই বাবলা ফোন দেন শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে। তবে পুলিশ আসার আগেই ওই নির্যাতিতা ও তার স্বামীকে নিয়ে ছাত্রাবাসের দিকে রওয়ানা দেন বাবলা। সাইফুর-রবিউল এর কাছ থেকে গাড়ির চাবি উদ্ধার করেন। গেইটে দাঁড়িয়ে পুলিশের অপেক্ষা করেন। পুলিশ আসে এবং কয়েকজন নেতাও নাকি সেখানে আসে। ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন, তর্ক হয়, মীমাংসা করতে চান অর্থের বিনিময়ে। কিন্তু বাবলা অনড় ছিলেন রাজী হননি। বাবলা বলেছিলেন তাদের ছাড় দেয়া উচিত হবে না। তিনি নির্যাতিতার পাশে দাঁড়ান। মেয়েটি ও তার স্বামী ধর্ষণকারীদের ফেইস চিনলেও নাম জানতেন না। বাবলাই বলে দেন তারা কারা। এবং বলেন তাদের বিচার হওয়া উচিত। আসলে মানুষ মানুষের পাশে থাকলে অপরাধ করতেও অপরাধীরা চিন্তা করবে।
বাবলার মত মানুষরা এভাবে পদক্ষেপ নিলে মেয়েরা সমাজে চলতে ভয় পাবে না। বাবলাদেরকেও চিনে রাখুন। এরাও ছাত্রলীগের প্রোডাক্ট। ছাত্রলীগে যেমন ধর্ষক আছে তেমন ধর্ষণের প্রতিবাদকারী বাবলারাও আছে। বাবলাদেরকে ধন্যবাদ দিন। বাবলাদেরকে তাদের কাজের জন্য প্রাপ্য বাহবাটুকু দিন। ‘যে নারী দেখতে কালো তার চলন বাঁকা’ এই যুক্তিতে ছাত্রলীগের কেউ ভালো কাজ করলে সেই ভালো কাজটাকে বাঁকা চোখে দেখাটাও অপরাধ। যার যা প্রাপ্য তাকে সেটা দিন। ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানবেন বাবলা চৌধুরী।”
প্রসঙ্গত, ৬ ধর্ষকের মধ্যে একজনের বাড়ি হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার পূর্ব বাগুনিপাড়া গ্রামে। সে হলো শাহ জাহাঙ্গীর রহমানের ছেলে শাহ মাহবুবুর রহমান রনি। তাকে র‌্যাব গ্রেফতার করেছে। ধর্ষকদের তিন জনকেই হবিগঞ্জ জেলা থেকে গ্রেফতার করা হয়।