মাধবপুর প্রতিনিধি ॥ সোনাই-বোয়ালিয়া নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় হবিগঞ্জের মাধবপুরে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ধর্মঘর, চৌমুহনি, বহরা, আদাঐর, আন্দিউড়া, বুল্লা সহ বিভিন্ন ইউনিয়নে নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে দিন দিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে কৃষকের কয়েক হাজার একর রোপা-আমন ধানের জমি তলিয়ে যাচ্ছে। উপজেলার কয়েক হাজার একর রোপা আমন ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। আশ্বিনের এ অকাল বন্যায় উপজেলার দিগন্ত জুড়ে আমন ফসলের ক্ষতির আশঙ্কায় হতাশ হয়ে পড়েছেন উপজেলার কৃষকরা। এছাড়া পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আরো নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হবে। ক্ষতির আশঙ্কা আরো ব্যাপক আকারে বৃদ্ধি পাবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় ৪০ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। সরেজমিনে বন্যা কবলিত দিগন্ত জুড়ে সবুজ ধানক্ষেতে তাকালে প্রাণ জুড়িয়ে যায় কিন্তু অকাল বন্যার পূর্বাভাসে এবং নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফসলহানীর আশঙ্কায় হতাশ হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। এছাড়া সবেমাত্র জমিতে সারও দিয়েছেন কৃষকরা। আশ্বিনের এ বন্যায় সার দেয়া কালো কিচকিচে রোপা আমন পানির নিচে দু’দিনও টিকবে না এ আশঙ্কায় কৃষকরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। পূর্ব মাধবপুরের গ্রামের কৃষক খোকন মিয়া জানান, আষাঢ়-শ্রাবণের বন্যার সময় বন্যা না হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকরা প্রতিটি জমিতে আমন চাষ করেছে। ধানও হয়েছে বাম্পার কিন্তু বন্যার পূর্বাভাসে আমরা হতাশ হয়ে পড়েছি। বুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল ইসলাম মামুন জানান, তার ইউনিয়নের ৫টি গ্রামের মাঠে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। শুধু বন্যা নয় এসব এলাকায় ব্যাপক নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। শুধু তাই নয় বিভিন্ন বিলে মাছ ধরার জন্য প্রস্তুতিমূলক পাটি দিয়ে বাধ দিলেও অকাল পানিতে সেই স্বপ্ন আজ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বন্যা কবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রকল্প কর্মকর্তা সোলাইমান মজুমদার জানান, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পানি প্রবেশ করেছে। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে মনে মনে করছেন। গত বোরো মৌসুমেও পাহাড়ি ঢলে উপজেলার পাকা ধানের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। করোনার প্রভাব কাটাতে না কাটাতেই আবার পাহাড়ি ঢলে অনেক রোপা আমনের ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসনূভা নাশতারান বন্যা কবলিত এলাকাগুলোর কৃষকদেরকে সরকারি বিভিন্ন সহযোগিতা প্রদান করার আশ্বাস দেন।