স্টাফ রিপোর্টার ॥ বহুল আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা কামাল হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র আদালতের নির্দেশে পুকুর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে কামাল হত্যাকান্ডের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামীদের ৭ দিন রিমান্ড শেষে কামালকে হত্যা করে অস্ত্র কোথায় লুকিয়ে রেখেছে সেসব অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশ খুনীদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। গ্রেফতারকৃতরা জানায়, কামালকে হত্যা করে তাদের ব্যবহৃত অস্ত্র পানিতে ফেলে দেয়। তারই প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে পৌছে ৩টি ধারালো রামদা, ১টি কিরিচ, ১টি লম্বা চাকু ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
নবীগঞ্জ থানার এস.আই কামাল আহমদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে ফরিদ, জুনেদ, সাইফুল সহ আসামীদের সঙ্গে নিয়ে পানি থেকে ওইসব অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে শত শত মানুষ ভিড় জমান ঘটনাটি দেখতে।
উল্লেখ্য, গত ২২ জুলাই কামালকে নিমর্মভাবে খুন করা হয়। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় এলাকায় সর্বসাধারনের মধ্যে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। গত ৫ আগস্ট এলাকাবাসী বিশাল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেন।
কামাল হত্যা মামলার প্রেক্ষিতে গত ৪ আগস্ট ডিবি পুলিশ কামাল হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ১৩ জনকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে আরও ২ জনসহ মোট ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে কামালের চাচাতো ভাই ইসলাম উদ্দিন খুন হলে সেই মামলা পরিচালনা করেন কামাল। আর তিনি ওই মামলার সাক্ষী ও পরিচালনা করায় চেয়ারম্যান হাবিবুরের নেতৃত্বে কামালকে নির্মমভাবে খুন করে ঘাতকরা।
এ সংক্রান্ত তথ্যাদি পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে জানান হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বিপিএম পিপিএম।
পুলিশের হাতে গ্রেফতারকৃত আসামীরা তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ৭নং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের নির্দেশে আ’লীগ নেতা কামালকে খুন করেছে বলে তথ্য প্রদান করে। এছাড়া জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দিতে গ্রেফতারকৃত আসামীগণ কামাল হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে স্বীকার করে। আসামীগণ জানায়, কামালকে হত্যা করার এক সপ্তাহ আগে শিবগঞ্জ বাজারে চেয়ারম্যানের বাসায় রাত আনুমানিক ১১টায় আবিদ, ফারুক, ফরিদ, রফিক সহ আমরা চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এক গোপন বৈঠকে মিলিত হই। তখন ৭নং বড়ইউরি ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান আমাদেরকে বলেন, তোমরা কামালকে হত্যা করো নতুবা আমাকে হত্যা করো। যে কোন একজনকে খুন করতে হবে। কেননা আমি এই কামালের জন্য ঠিক মতো শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারতেছি না। মাঝে মধ্যে কামালের জন্য আমার দম বন্ধ হয়ে আসে এবং ভবিষ্যতেও সে আমার একমাত্র প্রতিদ্বন্ধী। যে ভাবেই হোক তাকে তোমরা ঈদের আগেই শেষ করে দাও। বাদীপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞ বিচারক আসামীদেরকে সরেজমিনে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারের নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের নির্দেশে এসব অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।