মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ থেকে ॥ প্রেমে সাড়া না পেয়ে নবীগঞ্জ সরকারি কলেজের ২ ছাত্রীর উপর হামলাকারী তিন যুবকের একজনকে ৬ মাসের কারাদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। রবিবার বেলা ২টার দিকে এ দন্ডাদেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আতাউল গনি ওসমানী। দন্ডিত মোফাজ্জল করগাঁও ইউনিয়নের ও কলেজের পার্শ্ববতী এলাকার মিল্লিক গ্রামের মৃত জহুর আলীর পুত্র।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নবীগঞ্জ সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণীর এক ছাত্রীর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে উঠে করগাঁও ইউনিয়নের জন্তুরী গ্রামের হারুন মিয়ার ছেলে এইচএসসি পরিক্ষার্থী হুমায়ুন মিয়া (২০)। বৃহস্পতিবার বিকেলে ক্লাস শেষে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় ওই ছাত্রীসহ তার এক সহপাঠী। দুই ছাত্রী টমটমে উঠার সময় দুই সহযোগীসহ হুমায়ুন মিয়া মেয়েটিকে প্রেম নিবেদন করে এবং তার মোবাইল নাম্বার চায়। মেয়েটি তার প্রস্তাবে রাজি না হয়ে দ্রুত টমটমে উঠতে থাকে। এ সময় হুমায়ুন ও মোফাজ্জলসহ তাদের আরেক সঙ্গী বিক্ষুব্ধ হয়ে মেয়েটির উপর হামলা করে তার ব্যাগ ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। একই সাথে তারা অপর মেয়েটির উপরও আক্রমণ চালায়। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কলেজের অন্য ছাত্ররা এগিয়ে এলে বখাটেরা পালিয়ে যায়।
এ ঘটনার পর ছাত্রী তার স্বজনদের নিয়ে এসে নবীগঞ্জ সরকারি ডিগ্রি কলেজ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানায়। এ সময় কলেজের শিক্ষকরা নবীগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দিলে থানার এসআই পার্থ রঞ্জন দাশ কলেজে উপস্থিত হন। পরে ওই ছাত্রী ৩ যুবকের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়। এ নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। ওই ৩ যুবকের মধ্যে দু’জন কলেজ ছাত্র এবং দন্ডাদেশপ্রাপ্ত মোফাজ্জল বহিরাগত। ওই ঘটনার পর থেকেই মোফাজ্জল, হুমায়ুন ও তার সহযোগী আত্মগোপনে চলে যায়। এদিকে গতকাল রবিবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নবীগঞ্জ থানার এসআই পার্থ রঞ্জন চক্রবর্তী নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের জন্তরী গ্রাম থেকে মোফাজ্জলকে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল গনি ওসমানীর কার্যালয়ে হাজির করলে তিনি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তার কথাবার্তায় সন্দেহ হওয়ায় তাকে নিয়ে প্রথমে কলেজে ও পরে ওই ছাত্রীর বাড়ি উপজেলার বড় ভাকৈর ইউনিয়নের বাগাউরা গ্রামে যান এই কর্মকর্তা। এ সময় ছাত্রী সনাক্ত করে করে আটককৃত মোফাজ্জলের সামনেও ঘটনার বর্ণনা দেয়। পরে তিনি কার্যালয়ে এসে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অপরাধে মোফাজ্জলকে ৬ মাসের কারাদ- প্রদান করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল গনি ওসমানী বলেন, মোফাজ্জল প্রথমে ঘটনার সাথে জড়িত নেই বলে জানালে তাকে নিয়ে কলেজে ও ওই ছাত্রীর বাড়িতে যাই। তখন তার সামনে ওই ছাত্রী অভিযোগ করে ঘটনার বর্ণনা দেয়। পরে মোফাজ্জল অপরাধ স্বীকার করে। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় ৬ মাসের কারাদ- প্রদান করা হয়েছে।
নবীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) গোলাম দস্তগীর আহমেদ জানান, দন্ডপ্রাপ্ত মোফাজ্জলকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।