লাখাই প্রতিনিধি ॥ লাখাই উপজেলায় ইকবাল হোসেন মেম্বার স্ত্রীকে ডিভোর্স লেটার দেওয়ার পরও স্ত্রীর দাবি করে জোরপূর্বক মেলামেশা করায় স্ত্রীর দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় এখন জেলহাজতে।
সূত্র জানায়, লাখাই উপজেলার বামৈ ইউনিয়নের নয়াগাঁর গ্রামের মৃত আব্দুর রউফের ছেলে ১নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার ইকবাল হোসেন একই উপজেলার পুর্ব সিংহগ্রামের রমজান আলীর মেয়ে শারমিন জাহানকে (৩২) ৪ বছর আগে বিয়ে করেন। এর আগে ইকবাল হোসেন আরো ২টি বিয়ে করেন এবং শারমিন জাহানেরও ২টি বিয়ে হয়। শারমিন জাহান জানান, ৭/৮ বছর আগে হবিগঞ্জ জেলার আসেরা-ফান্দ্রাইল গ্রামের আব্দুস সালামের সাথে তার ২য় বিবাহ হয়। বিবাহের পর শারমিনের গর্ভে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। স্বামী আব্দুস সালাম সন্তানটি তার ঔরসজাত নয় বলে দাবি করেন। ফলে তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে এবং শারমিন বাদী হয়ে স্বামী আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের করেন। শারমিন আগের স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করার পর ইকবাল হোসেন মেম্বার প্রায়ই তাকে মামলায় সহযোগিতা এবং পরামর্শ দিতেন। শারমিন আরো জানান, প্রায় ৪ বছর পুর্বে তার ছেলের ডিএনএ টেস্ট করানোর জন্য ঢাকা যাওয়া লাগবে শুনে ইকবাল হোসেন তাকে সহযোগিতা করার জন্য তার সাথে ঢাকা যায়। এ সুযোগে ইকবাল তার ও তার ছেলের ছবি লাগবে বলে তার কাছ থেকে ছবি নেয় এবং অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে এক পর্যায়ে জোরপুর্বক আমাকে বিবাহের এফিডেভিট কপির মধ্যে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করায়। এরপর থেকে ইকবালের সাথে আমাার দাম্পত্য জীবন শুরু। হঠাৎ গত ৭ জানুয়ারি আমার কাছে স্বামী ইকবালের একটি ডিভোর্স লেটার হবিগঞ্জ কোর্ট থেকে আসে। ডিভোর্স লেটার দেওয়ার পরও সে মাঝে মধ্যে আমার বাড়িতে এসে আমাকে শারীরিকও মানসিক নির্যাতন করে। বিষয়টি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে জানালেও সে কারো কথায় কোনো কর্নপাত না করে প্রায়ই আমাকে স্ত্রী দাবি করে শারিরীক নির্যাতন করে। শারমিন বলেন, এক পর্যায়ে অসহায় ও নিরুপায় হয়ে প্রায় ১৫ দিন পুর্বে আমি এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেই। অন্যান্য দিনের ন্যায় গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১১টায় ইকবাল আমাকে শারীরিক নির্যাতন সহ জোরপূর্বক ধর্ষণ করলে আমি গোপনে লাখাই থানার অফিসার ইনচার্জকে মোবাইলে বিষয়টি জানাই। লাখাই থানার এসআই বাশার একদল পুলিশ নিয়ে বাড়িতে এসে আমাকে সহ ইকবালকে থানায় নিয়ে যান।
লাখাই থানার অফিসার ইনচার্জ সাইদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মহিলা রাতে আমাকে ফোন দিলে আমি আমার থানার এসআই বাশারকে পাঠাই। ঘটনাস্থলে গিয়ে ইকবালকে পায় এবং সে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। তিনি আরো বলেন, মেম্বার ইকবালের স্বভাব ভাল না। এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই বাশার বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে ধর্ষণের সংশ্লিষ্টতা আছে বিধায় আমরা ভিকটিম সহ ইকবালকে থানায় নিয়ে আসি। পরে গতকাল বুধবার ভিকটিম শারমিন জাহান বাদী হয়ে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করলে ইকবাল মেম্বারকে ধর্ষণ মামলায় জেলহাজতে পাঠাই। ভিকটিম শারমিন জাহানকে মেডিকেল রিপোর্টের জন্য হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করি।