মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ হবিগঞ্জে কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোতে প্রকৃত স্কুলিং না থাকার কারণে যারা ২য় ও ৫ম শ্রেণিতে ভর্তি হয় তাদের অভিভাবকদের অসুস্থ প্রতিযোগিতায় ফেলতে কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। ভর্তি পরীক্ষায় সুযোগ পাওয়ার জন্য সারা দিন কোচিংয়ে উৎসাহিত করা হচ্ছে। ভূক্তভোগী অভিভাবকরা এমনটাই দাবি করছেন।
মিশু আক্তার নামে একজন অভিভাবক বলেন, যদি প্রতিটি স্কুলে সঠিকভাবে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করানো হতো এবং স্কুলে শিক্ষার পরিবেশ ঠিক রাখা হতো তাহলে ২য় ও ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ের প্রয়োজন হতো না। হবিগঞ্জে দুটি সরকারি স্কুলে ভর্তি নিয়ে যে প্রতিযোগিতা চলছে তাতে শুধু স্কুলে লেখাপড়া করে সেই প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীরা টিকতে পারবে না। তাদের আলাদা যতœ নিতে হবে, কোচিং করাতে হবে অভিভাবকদের তাতে উৎসাহিত করা হয়। নিজের সন্তানকে প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ করাতে অভিভাবকরাও কোচিং করাতে উৎসাহিত হন। তিনি মনে করেন ২য় ও ৫ম শ্রেণির সরকার নির্ধারিত যে বই রয়েছে তা স্কুলে নিয়মিত ও সঠিকভাবে ক্লাসে পড়ানো হলে ওই কোর্স ২ বার পড়ানো সম্ভব।
কাউছার মিয়া নামে একজন অভিভাবক বলেন, ভর্তি পরীক্ষার জন্য ৫০ মার্কের যে পরীক্ষা নেয়া হয় প্রতিটি স্কুলে নিয়মিত পাঠদান করানো হলে প্রতিটি শিশুই পরীক্ষায় পাশ করতো। কিন্তু কোচিং বাণিজ্যের কারণে তা করা হয় না। বরং কোচিংয়ে অভিভাবকদের উৎসাহিত করা হয়। ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে যে হারে বাণিজ্যিক চিন্তা ভাবনার প্রসার ঘটছে তা আমাদের জন্য অমঙ্গল ডেকে আনছে। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যত বিশেষ করে শিশু শিক্ষার জন্য তা ভয়ানক পরিণতি ডেকে আনবে বলে তিনি মনে করেন।
মোঃ নাছির উদ্দিন নামে একজন অভিভাবক বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় সরকার নির্ধারিত বই ৩টি মাথায় নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। আর বইগুলোও বাচ্চাদের উপযোগী করেই তৈরি করা হয়েছে। তাই সেইদিক বিবেচনা করে বাচ্চাদের সামর্থ্যের মধ্য থেকে প্রশ্ন করা হলে তা শিশুদের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে। যে যতটুকু ভার বহনে সক্ষম তাকে ততটুকুই ওজন দিতে হবে। তাছাড়া স্কুলের শৃঙ্খলা ঠিক থাকলে এবং সঠিকভাবে পাঠদান করানো হলে কোচিংয়ের কোন প্রয়োজন হবে না বলে তিনি মনে করেন।
তিনি আরও বলেন, এখন অভিভাবকদের কাছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মান নির্ধারিত হয় ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর হারের উপর। যে কারণে অধিকাংশ স্কুল সামগ্রিক শিক্ষার মানের দিকে দৃষ্টি না দিয়ে ভর্তি কেন্দ্রিক শিক্ষার দিকে ঝুঁকে পড়ছে বেশি। যা আমাদের জন্য অমঙ্গলই ডেকে আনছে। তিনি প্রতিটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলকে নীতিমালায় আনার দাবি জানান। তিনি মনে করেন এতে শিক্ষার মান বাড়বে।
অভিভাবকদের কাছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মান নির্ধারিত হয় ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর হারের উপর
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com