স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরতলীর হিন্দু অধ্যুষিত নারায়ণপুর গ্রামে হত্যা মামলার আসামীদের পুরুষশূন্য বাড়িতে প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা, শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। এমনকি এক যুবতীকে গণধর্ষণ করায় ওই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল ওই যুবতীর মরদেহের ময়না তদন্ত শেষে স্থানীয় শ্মশানঘাটে দাহ সম্পন্ন করা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, নারায়ণপুর গ্রামের সুধীন্দ্র চন্দ্র গোপের ছেলে মিলমিশ সামাজিক সংগঠন এর সাংগঠনিক সম্পাদক প্রসেনজিত গোপের সাথে মন্দিরের জায়গা নিয়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্দা জামাত নেতা শামছুল হুদা গংদের সাথে বিরোধ চলে আসছিল। ওই বিরোধের জের ধরে গত ৯ আগস্ট দুপুরে শামছুল হুদা গং দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিরোধপূর্ণ মন্দিরের জায়গাটি দখল করতে যায়। এ খবর পেয়ে প্রসেনজিত গং এসে বাধা দেয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে শামছুল হুদার ছোট ভাই সাজ্জাদ হুদা নিহত হন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের আরো অর্ধশতাধিক লোকজন আহত হয়। এ দিকে সাজ্জাদ হুদার নিহতের ঘটনায় ১১ আগস্ট হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় ৩০ জনকে আসামী করে তার ভাই শামছুল হুদা হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যা মামলা দায়েরের পর থেকে আসামী পক্ষের বাড়ী পুরুষশূন্য হয়ে যায়। এ সুযোগে পুরুষশূন্য বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট শুরু করে বাদীপক্ষের লোকজন। এমনকি আসামীপক্ষের যুবতী মেয়েদেরকে শ্লীলতাহানিও করে তারা। সোমবার (২৬ আগস্ট) রাতে মামলার অন্যতম আসামী প্রসেনজিৎ গোপের বোন গণধর্ষণের শিকার হয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) নিহত যুবতী অম্মি গোপের লাশের ময়না তদন্ত শেষে দাহ সম্পন্ন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে নিহত অম্মি গোপের মা অঞ্জলি গোপ জানান, সাজ্জাদ হুদা হত্যার পর থেকে তারা আমাদের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাট করছেন। ইতোমধ্যে তারা আমাদের বাড়িঘর থেকে কয়েক লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছেন। শুধু তাই নয়, আমাদের মহিলাদের তারা নির্যাতন করেছেন। ২৬ আগস্ট রাতে তারা আমার মেয়েকে জোরপূর্বক গণধর্ষণ করে। আমার মেয়ে নিজের ইজ্জত রক্ষা করতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। আমি এর বিচার চাই।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অজয় চন্দ্র দেব জানান, আমরা নিহতের লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন করে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। তার পরিবার লাশের দাহ সম্পন্ন করেছেন। ছুরতহাল রিপোর্টে প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। মামলা দায়ের করলে আমরা আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।