হিজবুত তাওহিদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং হবিগঞ্জে তাদের অফিস বন্ধ করার দাবি
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ সদর উপজেলার দীগলবাগ এলাকায় আল্লাহ এবং প্রখ্যাত আলেম শায়েখ আব্দুর রহমান দীগলবাগীকে নিয়ে ফেসবুকে অশ্লীল কমেন্ট এবং ওই এলাকায় হিজবুত তাওহিদের কর্মকান্ডে দেখা দেয় অস্থিরতা। এ ব্যাপারে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে নারায়নপুর গ্রামের আলমগীর আলম ও তার ভাই জেলা হিজবুত তাওহিদ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমকে আসামী করে দায়ের করা হয় মামলা। ওই দুই আসামীর সাথে সম্পৃক্ত ও ইন্দনদাতা হিসাবে গ্রেফতার হয় ইউপি মেম্বার রজব আলী। পরবর্তীতে ইসলামী সংগ্রাম পরিষদ ডাক দেয় আন্দোলনের। কিন্তু পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতায় প্রধান দুই আসামীকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করার পর কমে যায় অস্থিরতা। এই পরিস্থিতিতে হবিগঞ্জ সদর থানা পুলিশ প্রশাসন গতকাল বিকেলে দীগলবাগ বাজারে আয়োজন করে বিট পুলিশিং সভা। হাজারো জনতা উপস্থিতি হন এই সভায়।
২৮ পঞ্চায়েত সভাপতি ও জেলা ইসলামী সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবু সালেহ সাদীর সভাপতিত্বে এবং হবিগঞ্জ সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি শেখ সেবুল আহমেদ এর সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান, হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি মাসুক আলী। বক্তৃতা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান শামীম, গোপায়া ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন, ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোঃ শামছুল হুদা, নুরুজ্জামান চৌধুরী, অ্যাডভোকেট শাহ ফখরুজ্জামান, মাওলানা জাবের আল হুদা চৌধুরী, আব্দুল মালেক, লোকমান সাদী, মাওলানা কামরুল ইসলাম, হবিগঞ্জ সদর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক সাহিদ আহমেদ ও খুর্শেদ আলম।
সভায় এলাকাবাসী হিজবুত তাওহিদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং হবিগঞ্জে থাকা অফিস বন্ধ করার দাবি জানান। পাশাপাশি শীতে মেলা ও ওরসের নামে অশ্লীলতা ও জুয়া বন্ধ এবং মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। জঙ্গীবাদ প্রতিরোধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয় এবং আল্লাহ ও শায়েখ আব্দুর রহমান দীগলবাগীকে অবমাননাকারী আলমগীর, জাহাঙ্গীর, রজব আলীসহ এর সাথে জড়িত ও ইন্দনদাতাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়। সাম্প্রতিক সময়ে দীগলবাগে সৃষ্ট ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকার জন্য বক্তারা ধন্যবাদ জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা বলেন, জঙ্গীবাদকে কোনভাবেই মাথাছাড়া দিয়ে উঠতে দেয়া যাবে না। হবিগঞ্জের অনেক সুনাম রয়েছে। তা অক্ষুন্ন রাখতে হবে। বর্তমান সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমে দ্রুত বদলে যাচ্ছে এই জেলা। এভাবে চলতে থাকলে দেশের প্রথম কয়েকটি জেলার মাঝে হবিগঞ্জের নাম থাকবে। এই এগিয়ে যাওয়ার সাথে আমাদেরকে মাদক, জুয়া ও গ্রাম্য দাঙ্গা কমাতে হবে। আমরা মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। এ ব্যাপারে আমরা জনগণের সহযোগিতা প্রত্যাশা করি। আমরা চাই জনগণের সাথে পুলিশের কোন দূরত্ব থাকবে না। পুলিশকে তথ্য দিলে সমাজ উপকৃত হবে। যে কেউ পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে পারে। যারা তথ্য দিবে আমরা তাদের পরিচয় প্রকাশ করব না। সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে সকলে মিলে কাজ করে যেতে হবে।