সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ে এমপি মজিদ খান
এসএম সুরুজ আলী ॥ হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচঙ্গ-আজমিরীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোঃ আব্দুল মজিদ খান বলেছেন- ‘হবিগঞ্জ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়’ বানিয়াচং উপজেলার নাগুড়া ফার্মে (হবিগঞ্জ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট) স্থাপন হলে সরকারের অন্তত ৫শ’ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। এখানে যে অবকাঠামো রয়েছে তাতে বর্তমানেই শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব। এছাড়া এ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রায় সাড়ে ৮৬ একর জমি ছাড়াও এখানে রয়েছে আরও প্রায় সাড়ে ২৪ একর সরকারি জমি। শুধু তাই নয়, এখানে যে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে তার বাজার মূল্যও জেলা সদরের যে কোন জমির চেয়ে কম। কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের প্রস্তাবনা মূলত এ গবেষণা কেন্দ্রটিকে কেন্দ্র করেই করা হয়েছিল।
সোমবার দুপুরে নিজ বাসভবনে হবিগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন- ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী হবিগঞ্জ সফরে এসে লক্ষাধিক লোকের জনসভায় হবিগঞ্জ জেলায় একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ পাঁচটি দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। হবিগঞ্জ শহরের অতি সন্নিকটে ১৯৩৪ সনে প্রতিষ্ঠিত নাগুড়া কৃষি ফার্ম ও গবেষণাগারে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের যৌক্তিকতা সেদিন সভামঞ্চে প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সহায়তায় প্রধানমন্ত্রীর নিকট তুলে ধরি। আমাদের যৌক্তিক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী দাবি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন। সভামঞ্চে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত নাগুড়া ফার্মকে হাইলাইট করে বক্তব্য দেয়ায় এবং প্রধানমন্ত্রীর বিদায়কালে হ্যালিপ্যাডে তখনকার জেলা প্রশাসককে উক্ত জায়গাটি বাছাই করার পরামর্শ দেয়ায় তখন থেকেই জনগণ জেনে আসছে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হবে নাগুড়া ফার্মে। গত ১০ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ হলে হবিগঞ্জ জেলায় আনন্দ ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশিত হতে থাকে। কিন্তু ২/১ দিন পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নের জন্য পাসকৃত আইনের ৩নং দফায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদত্ত বিধান, স্থায়ী কমিটি কর্তৃক পরিবর্তন করে সংসদে উপস্থাপন ও পাশ হওয়ার সংবাদ প্রচার হওয়ায় জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। আইনের ৩নং দফার বিষয়বস্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক সংসদে পাঠানো বিলে ছিল “হবিগঞ্জ জেলায়” হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হবে। কিন্তু সংসদীয় স্থায়ী কমিটির পরিবর্তিত বিধান হল- “হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলায়” কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হবে। স্থায়ী কমিটি হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রেক্ষাপট, হবিগঞ্জ জেলার উপজেলাগুলোর অবস্থান ও ভূমি কৃষি-অকৃষি-খাস এবং সরকারী অর্থের সাশ্রয় ইত্যাদি সম্পর্কে অবহিত না হয়েই, অনেকটা না জেনেই সংশ্লিষ্ট বিধানটি পরিবর্তন করেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টি নাগুড়া কৃষি ফার্মে স্থাপনে আইনী জটিলতা দেখা দেয়। সুতরাং উপরোক্ত অবস্থার প্রেক্ষিতে সার্বিক বিবেচনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি কামনা করেন এমপি মজিদ খান।
মতবিনিময় সভায় এমপি মজিদ খান বলেন, আইন অনুযায়ী এটি হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় হওয়ার কথা। এতে আমার কোন সমস্যা নেই। তবে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে হলে অবকাঠামো এবং ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ সরকারের অন্তত ৫শ’ কোটি টাকা সাশ্রয় হতো।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বানিয়াচং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চৌধুরী, আওয়ামীলীগ নেতা তজম্মুল হক চৌধুরী, বানিয়াচং উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আমিন, বানিয়াচং উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হাসিনা আক্তার।