তীব্র শীতে কাপছে হবিগঞ্জ ॥ শীতের দাপট আরো বাড়বে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সারা দেশের ন্যায় হবিগঞ্জেও বাড়ছে তীব্র শীতের প্রকোপ। চলামান শৈত্যপ্রবাহ, বৃষ্টি এবং সূর্য্যহীনতায় হীম শীতল বাতাস প্রবাহমান থাকায় এ শীতে ক্রমাগত বেড়েই চলছে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব। বিশেষ করে এ ঠান্ডায় খুব বেশী ভুগছেন শিশু-শিশোর আর বয়স্করা। ইতোমধ্যে ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে। রোগীর ভিড় বেশী থাকায় চিকিৎসা সেবা দিতে বেশ হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরাও। গত বৃহস্পতিবার ও গতকাল শুক্রবারে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৮ জন। এদের মধ্যে বেশীর ভাগই শিশু ও নবজাতক। তাছাড়া ডায়রিয়া, আমাশয়, নিউমোনিয়াসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত আরও ভর্তি হয়েছেন ৫১ জন। হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স মিথু রাণী দেব বলেন, ‘গত ২ দিনে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ৫১ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন। রোগী বেশী থাকায় চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে অবশ্যই গরম কাপড়সহ পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
গতকাল সকাল ৯টা থেকে আবহাওয়ার ২৪ ঘন্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও রাজশাহী বিভাগের দুয়েক জায়গায় হালকা ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া আজ সারাদেশে অস্থায়ীভাবে মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কেথাও কোথাও ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।
গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির সঙ্গে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে সারা দেশ। কোথাও কোথাও তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও উত্তর অঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। বৃষ্টিপাত কমলেও শীতের এই দাপট সারাদেশে আরও কিছু দিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এদিকে মৌসুমী শীতের ভয়াবহতায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ছিন্নমূল অসহায় মানুষেরা। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শীতকালিন রোগীর চাপ।
বিপর্যয় নেমে এসেছে জন জীবনে। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে বয়স্ক, শিশু ও ছিন্নমুল মানুষেরা। রাজধানীবাসী এই শীতে যতটা কাতর, অনেক বেশি বিপর্যয় দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে। রাজধানীর তুলনায় এসব এলাকায় তাপমাত্রা কমেছে তিন থেকে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। এই তাপমাত্রা আরও কমবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বৃষ্টিপাত কমে গেলেও শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। বৃহস্পতিবার বিকালের পর থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকা শুরু হয় হালকা বৃষ্টিপাত। রাতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয় রাজধানী ঢাকাতেও। তাতে শীতে অনুভূতি খানিকটা বেড়েছে। পরবর্তী ৭২ ঘন্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে রাতের তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে পারে। উত্তর অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে।
আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন বলেন, সারাদেশের তাপমাত্রা রাতে কমবে ও দিনে বাড়বে। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে আসবে কিন্তু সারাদেশে কুয়াশা বাড়বে। দেশের উত্তর অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে এবং আরো কিছু এলাকায় বিস্তার লাভ করতে পারে। সারাদেশের আবহাওয়া এরকম আরো কিছুদিন অব্যাহত থাকবে।