হবিগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কে দুই ব্রিজের উপর দিয়ে যানবাহন যাতায়াত করছে ঝুঁকি নিয়ে

স্টাফ রিপোর্টার, বানিয়াচং থেকে ॥ হবিগঞ্জ-বানিয়াচং আঞ্চলিক মহাসড়কের সুটকী ও রতœার বেইলি ব্রিজ যে কোনো সময় ভেঙে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। চালকরা বলেছেন, ব্রিজ দুটি খুবই বিপদজ্জনক। ভেঙে পড়ে ঘটতে পারে প্রাণহানির ঘটনা। জেলা শহর হবিগঞ্জের সঙ্গে যোগাযোগের এটিই একমাত্র পথ। ব্রিজ ভেঙে পড়লে চরম দুর্ভোগ নেমে পড়বে বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ দুটি উপজেলার লাখ লাখ মানুষের। সড়ক ও জনপথ বিভাগ ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ দুটির মুখে সাইনবোর্ড টানিয়ে ভারি যান চলাচলে নিষেধ করেছে। কিন্তু বিকল্প পথ না থাকায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যানবাহন চলছেই। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্রিজ পারাপারে চরম আতংকে ভুগেন চালকসহ যাত্রীরা। দ্রুত নতুন ব্রিজ নির্মাণের দাবি উঠেছে দুই উপজেলাবাসীর।
সরেজমিন দেখা গেছে, সুটকী নদীর বেইলি ব্রিজটি সবচেয়ে বিপদজ্জনক হয়ে আছে। স্ল্যবের স্থানে স্থানে ছিদ্র হয়ে গেছে। নাট-বল্টু খুলে গিয়ে নড়বড়ে অবস্থায়। ছিদ্র স্থান দিয়ে দেখা যায় নদী। ফেটে যাওয়া অংশে গাড়ি উঠলে দেবে যায় সেতুটির এক পাশ। মাল বোঝাই ট্রাক উঠলে পুরো ব্রিজ থর থর করে কেঁপে উঠে। কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে কংক্রিট ও পিচ ঢেলে একটি স্ল্যবের সঙ্গে অন্যটির জোড়াতালি দিয়ে কোনো রকম জায়গামত বসিয়ে রেখেছে। ব্রিজের দুই পাশে সাইনবোর্ড ‘ঝুঁকিপূর্ণ সেতু, পাঁচ টনের অধিক যানবাহন চলাচল নিষেধ’। রতœা নদীর বেইলি ব্রিজও নড়বড়ে অবস্থায়। এই ব্রিজের পাঠাতন মাঝে মাঝে উল্টে পড়ে। বিপদজ্জনক দুই ব্রিজ দিয়ে জীবন ঝুঁকির মুখে শত শত যাত্রীবাহী বাস ও মালবাহী ট্রাক চলাচল করছে।
বাস চালক গিয়াস উদ্দিন জানান, সুটকী ও রতœার বিপদজ্জনক ব্রিজে গাড়ি উঠলে ভয় লাগে, কখন জানি ব্রিজ ভেঙে দুর্ঘটনার কবলে পড়ি। ব্রিজ দুটির প্লেইট প্রায়ই খুলে নদীতে পড়ে যায়। সড়ক বিভাগের লোকেরা জোড়াতালির কাজ করান। গেল এক বছরে সওজ বিভাগ অন্তত ১০ বার জোড়াতালির কাজ করেছে। কাজের সময় যানবাহন সরাসরি চলাচল বন্ধ থাকে। এপার-ওপারে গাড়ি বদল করে চলতে গিয়ে যাত্রীরা সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েন। মালাপত্র পরিবহণ বন্ধ থাকায় স্থানীয় বাজারগুলোতে জিনিসপত্রের দামে মারাতœক প্রভাবে পড়ে।
হবিগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, দুটো সেতুই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষ করে সুটকীর সেতু নির্মাণ করাটা জরুরি হয়ে পড়েছে। এ পথ দিয়ে বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলার ধান ও মৎস্য সম্পদ পরিবাহিত হয়। যদি কোনো কারণে সেতু ভেঙে পড়ে দুটি উপজেলা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। সেতু নির্মাণের প্রস্তাব কয়েকবার পাঠিয়েছি। জুন মাসের ১৪ তারিখে সচিব সিলেটে আসেন। ওই মিটিংয়ে সুটকী সেতুর কথা সবিচ স্যারকে বলেছি। সচিব স্যারের কথামত ক’দিন আগে আবারও প্রস্তাব পাঠিয়েছি। যদি পাশ হয় তাহলে কাজ হবে।