জাবেদ তালুকদার ॥ নবীগঞ্জ উপজেলায় এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে পাশের হারে ব্যাপক ধ্বস নেমেছে। উপজেলার সরকারি ও বেসরকারি কলেজগুলোতে আশানুরূপ ফলাফল না আসলেও মাদ্রাসাগুলো তুলনামূলক ভালো ফলাফল করেছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় এ বছর নবীগঞ্জ উপজেলা থেকে মোট ২ হাজার ২৮০ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে কৃতকার্য হয়েছে ১ হাজার ৩৬০ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৩ জন। সামগ্রিক পাশের হার ৫৯.৬৪%।
উপজেলার মধ্যে সর্বোচ্চ পাশের হার অর্জন করেছে এনায়েত খান মহিলা কলেজ (৯৫.২৪%) এবং সর্বনিম্ন পাশের হার আউশকান্দি রশিদিয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে (৩৩.৪৫%)। মাদ্রাসা পর্যায়ে শতভাগ পাশ নিয়ে সেরা সাফল্য অর্জন করেছে তাহিরপুর ন’মৌজা ইত্তেফাকিয়া আলিম মাদ্রাসা। এরমধ্যে এইচএসসিতে মোট ২ হাজার ৯০ জন অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েছে ১ হাজার ২০৮ জন ও জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র দুজন, পাশের হার ৬৬.২৮%। আলিম পরীক্ষায় (মাদ্রাসা) ১৬৭ জন অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৪৬ জন, জিপিএ-৫ পেয়েছে একজন ও পাশের হার ৮৬.০৮%। তাছাড়া ভোকেশনাল শাখায় ২৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬ জন কৃতকার্য হয়েছে, পাশের হার ২৬.০৯ শতাংশ।
বিদ্যালয় ভিত্তিক ফলাফলে দেখা যায়- নবীগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে অংশ নেয় ৮৫৯ জন পরীক্ষার্থী, কৃতকার্য হয় ৫৪১ জন, পাশের হার ৬৩.১০ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ জন। ইনাতগঞ্জ কলেজ থেকে ২৪৪ জনের মধ্যে পাশ করেছে ১৬৬ জন (পাশের হার ৬৮.০৩%)। দিনারপুর কলেজ থেকে অংশ নেয় ২১২ জন, পাশ করে ৮৯ জন (৪১.৯৮%)। কীর্তিনারায়ন কলেজ ৫৩ জনের মধ্যে ৪৭ জন কৃতকার্য হয়ে উপজেলার মধ্যে অন্যতম সেরা পাশের হার অর্জন করেছে (৮৮.৬৮%)।
এছাড়া রাগীব রাবেয়া কলেজ থেকে অংশ নেয়া ২৪৮ জনের মধ্যে পাশ করেছে ১২২ জন। পাশের হার ৪৯.১৯%। আউশকান্দি রশিদিয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে ২৯৩ জনের মধ্যে পাশ করেছে ৯৮ জন, পাশের হার ৩৩.৪৫%, জিপিএ-৫ পেয়েছে একজন। শরৎচন্দ্র নন্দলাল পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ১৫ জনের মধ্যে পাশ করেছে ৯ জন, প৪াশের হার ৬০%। দীঘলবাক উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ৩৯ জনের মধ্যে পাশ করেছে ২৮ জন, পাশের হার ৭১.৭৯%। উইমেন্স আইডিয়াল কলেজের ৬০ জনের মধ্যে পাশ করেছে ৪৯ জন, পাশের হার ৮১.৬৭%। নয়মৌজা কলেজে ২৫ জনের মধ্যে পাশ করেছে ১৯ জন, পাশের হার ৭৬% ও এনায়েত খান মহিলা কলেজে ৪২ জনের মধ্যে পাশ করেছে ৪০ জন, পাশের হার ৯৫.২৪%।
অন্যদিকে আলিমে সৈয়দপুর বাজার ফাজিল মাদ্রাসায় পাশের হার ৯১.৩০%, তাহিরপুর ন’মৌজা ইত্তেফাকিয়া আলিম মাদ্রাসায় ১০০% পাশ ও একজন জিপিএ-৫, শাহজালাল (র.) আলিম মাদ্রাসা ৯৬.৩০%, তাজিয়া মোবাশিরিয়া আলিম মাদ্রাসা ৬২.০৭% ও মুকিমপুর আলিম মাদ্রাসায় ৮০.৭৭%।
শিক্ষাবিদদের মতে, কলেজ পর্যায়ে ফলাফল নিম্নমুখী হওয়ার পেছনে রয়েছে শিক্ষক সংকট, নিয়মিত ক্লাস না হওয়া এবং শিক্ষার্থীদের অমনোযোগী মনোভাব। অপরদিকে মাদ্রাসায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীর নিবিড় সম্পর্ক, নিয়মিত পাঠদান ও ধারাবাহিক মূল্যায়ন পদ্ধতি ভালো ফলাফলের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
অভিভাবকরা জানান, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে সমন্বয় না থাকায় কলেজের শিক্ষার মান ক্রমেই নিচে নামছে।