
পাশের হার জেলায় সর্বনিম্ন ॥ জিপিএ-৫ শূন্য
নিতেশ দেব, লাখাই থেকে ॥ গতকাল এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর হতাশা নেমে এসেছে লাখাই’র শিক্ষাঙ্গনে। কারণ, চলতি বছরের পরীক্ষায় উপজেলার গড় পাসের হার মাত্র ২৬.৫৭ শতাংশ, যা সারাদেশের গড় পাসের হারের (৫৮.৮৩%) অর্ধেকেরও কম এবং হবিগঞ্জ জেলার মধ্যে সর্বনিম্ন। বিশেষ করে উপজেলার বেশ কয়েকটি কলেজে পাসের হার অত্যন্ত নাজুক। সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হলো- পুরো উপজেলায় কোনো শিক্ষার্থীই জিপিএ-৫ পায়নি। লাখাই মুক্তিযোদ্ধা সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে এ বছর ৩৭৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে মাত্র ১০২ জন। মনতৈল মডেল কলেজের ৩১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ২ জন। ভবানীপুর হাই স্কুল এন্ড কলেজের ১৮ জনের মধ্যে পাস করেছে ১ জন। মোড়াকরি হাই স্কুল এন্ড কলেজের ২০ জনের মধ্যে পাস করেছে মাত্র ১ জন। একমাত্র ব্যতিক্রম জিরুন্ডা মানপুর তোফাইলিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, যেখানে ২৩ জনের মধ্যে ১৭ জন পাস করেছে।
মোড়াকরি হাইস্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালে কলেজ হিসেবে অনুমোদন পেলেও এখন পর্যন্ত কোনো প্রভাষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। স্কুলের শিক্ষক দিয়েই কলেজের ক্লাস পরিচালনা করছি। এছাড়া কোনো সরকারি অনুদানও এখনো পাইনি।’
লাখাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘নতুন কলেজ অনুমোদনের পর নানা জটিলতায় এখনো প্রভাষক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। আমরা বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছি।’
স্থানীয় শিক্ষক ও অভিভাবকরা মনে করছেন, উপজেলার শিক্ষা ব্যবস্থায় মানসম্পন্ন শিক্ষকের অভাব, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা, পরিবারগুলোর শিক্ষায় অনাগ্রহ এবং নিয়মিত পাঠদানের ঘাটতি- এসবই এই ভয়াবহ ফলাফল বিপর্যয়ের মূল কারণ।
তাঁরা আরও বলেন, দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হলে আগামী বছরগুলোতে আরও ভয়াবহ ফলাফল বিপর্যয় দেখতে হতে পারে। বিশেষ করে শিক্ষক নিয়োগ, নিয়মিত ক্লাস ও সরকারি বরাদ্দ ছাড়া এই অবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়।