
স্টাফ রিপোর্টার || বিনা বিচারে কারাগারে থাকা লাখাই উপজেলার সিংহগ্রাম গ্রামের কনু মিয়া ৩০ বছর ২ মাস ২০ দিন পর গতকাল মঙ্গলবার হবিগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে বের হয়েছেন। ফিরেছেন মুক্ত আকাশে। ফেলেছেন শান্তির নিঃশ্বাস।
সূত্র জানায়, ১৯৯৫ সালের ২৫ মে ঘুমের ঘোরে জন্মদাত্রী মা মেজেষ্টর বিবিকে কুদাল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন কনু মিয়া। গ্রামবাসী তাকে আটক করে পুলিশে দেয়। পরেরদিন ৩ লাইনের একটি স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী প্রদান করেন কনু মিয়া। তারপর থেকে কনু মিয়ার জেল জীবন শুরু। এক দুই বছর নয় একাধারে ৩০ বছর ২ মাস ২০ দিন কেটেছে কারাগারে। প্রথমে ভাই স্বজনরা কনু মিয়াকে দেখতে কারাগারে গেলেও একটা সময় আর যাওয়া হয়নি।
পরিবারের অনেক সদস্য ভুলেই গিয়েছেন কনু মিয়া জীবিত না মারা গেছেন। ৩০ বছরের পরবর্তী প্রজন্মের অনেকে জানেনই না সিংহগ্রাম গ্রামে মৃত চিনি মিয়ার এক ছেলে আছে, যার নাম কনু মিয়া, সেই কনু মিয়া এখনো জীবিত।
পরিবার আত্মীয় স্বজন যখন কনু মিয়াকে ভুলতে বসেছেন ঠিক সেই সময় এ বিষয়টি নজরে আসে হবিগঞ্জের জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার (সিনিয়র সহকারী জজ) মুহম্মাদ আব্বাছ উদ্দিনের। তিনি কনু মিয়ার আইনগত প্রতিকার পাওয়ার উদ্যোগ নেন। বিষয়টি নিয়ে লিগ্যাল এইড এর প্যানেলভূক্ত আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম এ মজিদের সাথে কথা বলেন লিগ্যাল এইড অফিসার মুহম্মাদ আব্বাছ উদ্দিন। সার্বিক দিক বিবেচনায় ১৪ জুলাই হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজতী আসামী কনু মিয়ার জামিন আবেদন করেন লিগ্যাল এইডের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ।
জেলা ও দায়রা জজ জেসমিন আরা বেগম আসামী কনু মিয়ার জামিন মঞ্জুর করেন। গতকাল জামিনের কাগজপত্র জেলখানায় পৌঁছার পর আইনী প্রক্রিয়া শেষে দুপুরে জেল থেকে বের হন কনু মিয়া। এ সময় তার দুই ভাই কারাগারে উপস্থিত ছিলেন। ভাইয়েরা তাকে সাদরে গ্রহণ করেন। এ সময় এক আবেগঘণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়।