পুষ্টিগুণে ভরপুর গিমা কলমি শাক চাষে কৃষকের সফলতা
মো: মামুন চৌধুরী ||বাহুবল উপজেলার কচুয়াদি গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মোঃ আব্দুর রশিদ। তিনি বছরজুড়ে নানা ফসল চাষ করেন। নতুন ফসল হিসেবে পুষ্টিগুণে ভরপুর গিমা কলমি শাক চাষে তাকে পরামর্শ প্রদান করেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীম। তিনি এ পরামর্শে বাড়ির পাশে প্রায় ২০ শতক জমি আবাদ করেন। মে মাসের শুরুতে তিনি উন্নতজাতের বীজ রোপণ করেন। প্রায় ১৫দিন যেতেই চারা গজায়। জুন মাসের শুরুতে জমি থেকে গিমা কলমি শাক সংগ্রহ করে বিক্রি শুরু করেন।
সরেজমিন গেলে এসব তথ্য জানিয়ে কৃষক মোঃ আব্দুর রশিদ বলেন- জমি পতিত রাখতে চাই না বলেই, বারমাস নানা ধরণের ফসল চাষ করি। এখানে গিমা কলমি শাক চাষ করে দারুণ ফলন পেয়েছি। সপ্তাহে দুইদিন পর পর শাক কেটে দিগাম্বর বাজারে নিয়ে বিক্রি করছি। পাইকারের কাছে প্রতি শাক ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি করা হয়।
তিনি বলেন- শুরু যেমনটা পেয়েছি, বর্তমানেও পরামর্শ দিয়ে আমাকে সহায়তা করছেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীম। এ শাক চাষে তেমন একটা খরচ হয়নি। নেই রোগ বালাই। প্রায় লক্ষাধিক টাকা আয় করার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন- আমার ক্ষেতে ভালো ফলন দেখে এলাকার অন্যান্য কৃষকরাও গিমা কলমি শাক চাষে আগ্রহী হয়েছেন। বিক্রির পাশাপাশি এ শাক নিজের পরিবারের চাহিদা পূরণ হচ্ছে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীম বলেন- গিমা কলমি শাক চাষের জন্য সারা বছরই উপযুক্ত। তবে মধ্য মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত বীজ বপনের জন্য সেরা সময়। জমি প্রস্তুত করে লাইন করে অথবা ছিটিয়ে উভয় পদ্ধতিতেই বীজ বপন করা যায়। গিমা কলমি সাধারণত পুকুর, খাল, বিল বা জলাশয়ের ধারে এমনিতেই জন্মে থাকে। এটিকে টবেও চাষ করা যায়।
তিনি বলেন- গিমা কলমি শাক একটি পাতা জাতীয় সবজি, যা আমাদের দেশে বেশ জনপ্রিয়। এটি সাধারণত ভাজি বা অন্যান্য তরকারি হিসেবে খাওয়া হয়। গিমা কলমি শাকে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান, যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এটি ভিটামিন এ সি ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের একটি ভালো উৎস।
তিনি বলেন- পরামর্শ দিয়েছিলাম কৃষক মোঃ আব্দুর রশিদকে। তিনি জমি আবাদ করে চাষ করে গিমা কলমি শাক ভালো ফলন পেয়েছেন। তার ন্যায় এলাকার অন্যান্য কৃষকও গিমা কলমি শাক চাষ উৎসাহিত হয়েছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা চিন্ময় কর অপু বলেন- আমরা কৃষকদের উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছি। এতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গিমা কলমি শাক চাষ হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার কচুয়াদি গ্রামে উন্নত জাতের গিমা কলমি শাক চাষ করেন কৃষক মোঃ আব্দুর রশিদ। তার জমিতে চাষকৃত শাকের ফলন ভালো হয়েছে। তিনি বলেন- গিমা কলমি শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ ও আঁশ থাকে, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি ভিটামিন এ সি ক্যালসিয়াম, লৌহ ও আঁশ সমৃদ্ধ। গিমা কলমি শাক হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।