নিজস্ব প্রতিনিধি ।।হবিগঞ্জের সবচেয়ে বড় মাছের বাজারের নাম বাছিরগঞ্জ। শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নুরপুর ইউনিয়নের সুতাং বাজারের কাছেই এ বাজার। পাইকারি এ বাজারে পাওয়া যায় পুকুর, হাওর, নদ-নদী ও মুক্ত জলাশয়ের তরতাজা সব মাছ। ভোরের এ বাজার জমে সকাল ৬টায়। শেষ হয়ে যায় ৯টার মধ্যে। মাত্র তিন ঘণ্টায় এ বাজারে কেনা-বেচা হয় কোটি টাকার মাছ।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সন্নিকটে সুতাং নদীর তীরে স্বাধীনতার পর পরই এ বাজারটি চালু হয়।
প্রাচীন এ বাজারে দেশি-বিদেশি প্রজাতির রুই, কাতল,বোয়াল, শিং-মাগুরসহ নানা তাজা মাছ পাওয়া যায়। কাক ডাকা ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, কুমিল্লা, খুলনা, রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাক, মিনি ট্রাকে করে আসতে থাকে মাছ। গাড়িতে পলিথিনে মোড়ানো পানিতে তাজা মাছ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যান ব্যাপারীরা। ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে জমজমাট হয়ে ওঠে বাজার। টমটম, সিএনজি চালিত অটোরিকশা বা অন্যান্য গাড়িতে করে সেই মাছ খুচরা বিক্রেতারা নিয়ে যান হবিগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার বাজারগুলোতে। ভোরের আলো ওঠতে না ওঠতেই ছোট-বড় গাড়ি বোঝাই করে তরতাজা মাছ নিয়ে বিক্রেতারা আসেন পাইকারি এ বাজারে। পাইকারি এ মাছের বাজারে সারা বছরই পাওয়া যায় ইলিশ, রুই, কাতল, বোয়াল, আইড়, বাইম, গুলসা, চিংড়িসহ নানা জাতের মাছ। প্রতিযোগিতামূলক দরদামে মৎস্য আড়তের মালিকদের কাছ থেকে মাছ কিনেন স্থানীয় পাইকাররা। বর্তমানে বাজারে রুই আড়াইশ থেকে সাড়ে তিনোশো টাকা, বোয়াল ৫শ থেকে ১২শ টাকা, চিংড়ি সাড়ে ৫শ থেকে সাড়ে ৬শ টাকা, গুলশা ৪শ থেকে ৫শ টাকা, ট্যাংরা ৪শ থেকে ৫শ টাকা এবং অন্যান্য ছোট মাছ দেড়শ থেকে দু’শো টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাছিরগঞ্জ বাজারে ২৫টি আড়ৎ রয়েছে। মৌসুমে হবিগঞ্জের লাখাইর ছাইরা বিলসহ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী হাওরের মাছও এ বাজারে বিক্রি হয়।
বাছিরগঞ্জ বাজার মৎস্য আড়ৎ মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আরব আলী জানান, স্বাধীনতার পর পরই সুতাং রেল স্টেশনের পাশে এ বাজার যখন শুরু হয় তখন শুধু ইলিশ মাছ বিক্রি হতো। ব্যবসায়ী ছিলেন ৭/৮জন। এখন সব রকম মাছই এখানে বিক্রি হয়। হবিগঞ্জের সবচেয়ে বড় এ মাছের বাজারে প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার মাছ কেনাবেচা হয়। অর্ধশত বছরের পুরনো এ বাজারে সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা।
বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, বাছিরগঞ্জ মসজিদ মার্কেটের যে জায়গায় বাজার চালু রয়েছে, সেখানে জায়গার স্বল্পতা রয়েছে। রোদবৃষ্টি হলে ব্যবসায়ীদের কষ্ট হয়। বাজারের উন্নয়নে তিনি প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেন।