শায়েস্তাগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মুহাম্মদ আব্দুল কবির শিক্ষা বিস্তার, সমাজসেবা, ধর্মানুরাগের ক্ষেত্রে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। সৎ, নিষ্ঠাবান ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে, শিক্ষানুরাগী আর সৎ ও শোভন মানুষ কী ছিলেন না তিনি। এত গুণের সমাহার সাধারণত ব্যবসায়ীদের মধ্যে দেখা যায় না। মঙ্গলবার জহুর চান বিবি মহিলা কলেজ আয়োজিত স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে বক্তারা এসব কথা বলেন।
কলেজ অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে ও প্রভাষক মো. শাহিন মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কলেজের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার পল্লব হোম দাশ। বিশেষ অতিথি ছিলেন কবির কলেজিয়েট একাডেমির অধ্যক্ষ জালাল উদ্দিন শাওন, সাংবাদিক ফিরোজুল ইসলাম চৌধুরী, অভিভাবক সদস্য ইমদাদুল হক মিলন, প্রভাষক শোয়াইব আহমদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল হক, সাবেক কাউন্সিলর ফাহিন আহমদ, সমাজসেবী মো: শাহজাহান মিয়া, কলেজের দাতা সদস্য মো: ইদ্রিছ মিয়া, মোহাম্মদ শাবান মিয়া, মাওলানা আব্দুস শহীদ, কাজী মামুনুর রশীদ, হাসানুল হোসাইন, মো: ইমরানুল হক শাকিল। প্রধান বক্তা ছিলেন কলেজের দাতা সদস্য শরীফ মোহাম্মদ খাইরুজ্জামান ইমন। মরহুমের জীবনের উপর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন প্রভাষক কামরুল হাসান রিপন, শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস জেমি।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, টাকা-পয়সা হলে বা সফলতা এলে মানুষের মধ্যে সাধারণত ঔদ্ধত্য বা অহংকার আসে। কিন্তু যাঁরা বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ আব্দুল কবিরকে চিনতেন, তাঁরা জানেন, তাঁর মধ্যে কখনো অসৌজন্যতা দেখা যায়নি। দেশপ্রেমিক আব্দুল কবির ছিলেন একজন অকুতোভয় গেরিলা যোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি অসীম সাহসিকতার পরিচয় দেন।
তিনি ছিলেন একজন সফল উদ্যোক্তা। তাঁর হাত ধরেই বহু মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। জনশক্তি রপ্তানি, শিক্ষা বিস্তার ও সমাজসেবায় তিনি অনবদ্য অবদান রাখেন। তিনি ছিলেন এ দেশের ব্যবসায়ীদের কাছে ব্যবসায় সততার অনন্য উদাহরণ।
সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে তিনি জহুর চান বিবি মহিলা কলেজ, কবির কলেজিয়েট একাডেমি, সাবাসপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাবাসপুর জামে মসজিদ, নতুনব্রীজ মসজিদুল আমিন, আশরাফ উল্লাহ হিফজুল কুরআন মাদ্রাসাসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেন। তিনি ৭১ বছর বয়সে ৩ মার্চ ঢাকায় ইন্তেকাল করেন।
অনুষ্ঠানে কলেজের সকল শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। মরহুমের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল ও মোনাজাত পরিচালনা করেন হাফিজ শাব্বির আহমদ।