তৎকালীন সময়ে শহরের বাণিজ্যিক এলাকা ‘ঢাকাইয়া পট্টি’ হিসেবে বেশি পরিচিত ছিল
রাত ৮টার পরই শহর নিরব হয়ে পড়তো
মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ শত বছরের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে হবিগঞ্জের প্রবীণ ব্যক্তিত্ব, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান শহীদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন- ১৯৮৪ সালে হবিগঞ্জ জেলা ও পরে শহরে পরিণত হয়। মূলত এর পরই শহরে অত্যাধুনিক নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবহারের মাধ্যমে ডিসি অফিস, সরকারি হাসপাতাল, অফিস-আদালত, সরকারি-বেসরকারি মার্কেট, আধুনিক স্থাপনা নির্মাণ করা শুরু হয়। পৌরসভার শুরুতে অধিকাংশ বাসা-বাড়ি ছিল টিনের তৈরী। ক্ষিতিশ চন্দ্র দেব চৌধুরী ওরপে ক্ষিতিশ বাবু ওরপে ক্ষিতিশ মোক্তার, অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ওরপে বারী মুক্তার, রাজনগরের কামরুল হাসান (বর্তমান অনামিকা কমিউনিটি সেন্টারের মালিক) এর বাসা ছিল পাকা। যাদের পাকা ঘর ছিল তাদের অধিকাংশেরই দেয়াল ছিল ৩ ইঞ্চি আর উপরে ছিল টিন। ৪ ইঞ্চি দেয়ালে নির্মিত ঘর ছিল হাতে গোনা দু’চারটি। তৎকালীন সময়ে শহরের বাণিজ্যিক এলাকা ঢাকাইয়া পট্টি হিসেবে বেশি পরিচিত ছিল। সেখানে ঢাকার বিক্রমপুরের ব্যবসায়ীরা এসে ব্যবসা শুরু করেন। এর মধ্যে আলম শেঠ, কুদ্দুছ খান, শংকর বস্ত্রালয়ের মালিক ছিলেন অন্যতম। তৎকালীন সময়ে শহরের বাণিজ্যিক এলাকাই ছিল কাপড়সহ অন্যান্য দোকানের প্রাণকেন্দ্র। তখন আধুনিক কোন দোকানপাঠ ছিল না। ফ্রিজ বলতে হাতে গোনা দু’চারজনের বাসায় ছিল। কারো বাসায় এসি ছিল না। বৈদ্যুতিক ফ্যানই ছিল সীমিত। ওই সময়ে মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল ছিল না। শহরের সর্বত্র একটি গ্রামীণ পরিবেশ ছিল। রাত ৯টার পর খাওয়া দাওয়া করার জন্য কোন হোটেল-রেস্টুরেন্ট খোলা পাওয়া যেতো না। রাত ৮টার পরই শহর নিরব হয়ে পড়তো। শহরের প্রত্যেকটি মসজিদে মক্তব চালু ছিল। মক্তবে শিশু শিক্ষার্থীদের ফ্রি ‘কায়দা’সহ আরবী শিক্ষা দেয়া হতো। আর এসব মক্তবে যারা দায়িত্ব পালন করতেন পৌরসভার পক্ষ হতে তাদের ভাতা দেয়া হতো। শহরের শুরুতে শায়েস্তানগর, ইনাতাবাদ, জঙ্গলবহুলা, মোহনপুর, তেঘরিয়া, শ্যামলী, নিউ মুসলিম কোয়ার্টার, কোরেশ নগর, স্টাফ কোয়ার্টার শহরের অন্তর্ভূক্ত ছিল না। পরে এগুলো শহরের অন্তর্ভূক্ত হয়। আর সব শেষে পৌরসভার অন্তর্ভূক্ত হয় উমেদনগর।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com