চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে খোয়াই নদীর বাঁধে আরেকটি নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন খোয়াই নদী তীরবর্তী মানুষ। নদীর বাঁধেই অনেকে অস্থায়ী ত্রিপাল দিয়ে ঘর তৈরী করে রাত কাটিয়েছেন। অনেকেই রাতভর বাঁধের ছোট ছোট পকেট মেরামত করেছেন। নদী ভাঙ্গন থেকে বাঁচিয়েছেন উপজেলাবাসীকে। শুক্রবার ভোর রাত থেকেই খোয়াই নদীর পানি কমতে শুরু করে। সন্ধ্যা ৬টায় খোয়াই নদীর পানি বাল্লা পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৭৬ সেন্টিমিটার ওপর থাকলেও শুক্রবার দুপুরে তা ১৯৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
এদিকে খোয়াই নদীর রাজার বাজার ও নালমুখ এলাকায় নদীর বাঁধ উপচে ডুবে যাওয়া কয়েকটি গ্রামের মানুষ রাজার বাজার উচ্চ বিদ্যালয় ও সাবিহা চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিলেন। গতকাল শুক্রবার পানি কমায় বিকেলে তারা বাড়ি ফিরে গেছেন। উপজেলা বিএনপি ও যুবদলসহ বিভিন্ন সংগঠন তাদের ত্রাণ দিয়েছেন।
উপজেলার চুনারুঘাট কাজিরখিল থেকে শায়েস্তাগঞ্জ পর্যন্ত করিমপুর, আলাপুর, রামশ্রী গ্রামের অর্ধশত পরিবার খোয়াই নদীর বাঁধে অস্থায়ী ত্রিপল দিয়ে তৈরী ঘরে অবস্থান নিয়েছিলেন। তারা রাতভর নদীর পাড় পাহারা দিয়েছেন এবং রাত কাটিয়েছেন। তাদের অনেকের বাড়িঘরে পানি উঠে যাওয়ায় তারা সেখানে অবস্থান নেন। নদীর পানি কমে আসায় শুক্রবার বিকেলে সবাই বাড়ি ফিরে গেছেন।
হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ জানান, শুক্রবার দুপুর ৩টায় খোয়াই নদীর পানি বাল্লা পয়েন্টে ১৭৬ সেন্টিমিটার, শায়েস্তাগঞ্জে ১৫৩ সেন্টিমিটার ও শহরতলীর মাছুলিয়ায় ১৬৫ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ত্রিপুরায় বৃষ্টি না হওয়ায় খোয়াই নদীতে পানি কমে আসছে। আজকের মধ্যেই নদী স্বাভাবিক হবে।
চুনারুঘাট উপজেলা দুর্যোগ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্লাবন পাল জানান পুরো উপজেলায় আরো ১২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং তাদের মধ্যে শুকনা খাবার ও পানি বিতরণ করা হয়েছে।
চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার বলেন, সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় বন্যা কবলিত গ্রামগুলোতে আশ্রয়ন কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং সেখানে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাদের ত্রাণও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। পানি কমে আসায় তাদের অনেকেই বাড়ি চলে গেছেন।