বানিয়াচং থানায় নতুন পুলিশ সদস্য নিয়োগ দেয়া হবে ॥ পুলিশ সুপার
স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেরীতে হলেও অবশেষে শুরু হচ্ছে পুলিশী কার্যক্রম। হবিগঞ্জ জেলার ৯টি থানার মধ্যে ইতোমধ্যে ৮টি থানার অফিসিয়ালি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সীমিত পরিসরে কার্যক্রম শুরু হলেও ধীরে ধীরে তা বাড়ছে। আর থানার নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও আনসার সদস্যরা। তবে বানিয়াচং থানা ভবন আগুনে ভষ্মিভূত হয়ে যাওয়ায় এখনো সেখানে ফিরেনি কোন পুলিশ সদস্য। থানার আসবাবপত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়ে যাওয়া ও নানা সমস্যা থাকায় সেখানে সেবা কার্যক্রম শুরু হতে বিলম্ব হবে। যদিও অন্য ৮ থানায় পুলিশ কাজে ফেরায় থানায় সেবা গ্রহীতাদের সংখ্যা বাড়ছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় গিয়ে দেখা যায়, পুলিশের দাপ্তরিক কার্যক্রম চলছে পুরোদমে। ডিউটি অফিসার এএসআই মনিরা আক্তার পপি দায়িত্ব পালন করছেন। অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা যে যার মতো করে তাদের ডিউটি পালন করছেন। তাছাড়া জিডি ও লিখিত অভিযোগ দায়েরসহ নানা সমস্যা নিয়ে ডিউটি অফিসারের রুমে দেখা গেছে সেবা গ্রহীতাদের। সেবা গ্রহীতারা জানান, গেল কয়েকদিন থানায় কোন কার্যক্রম না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে তাদের। তবে এখন তা ধীরে ধীরে কাটতে শুরু করেছে। পুলিশ থানায় ফেরায় স্বস্থি আসতে শুরু করেছে জনমনে।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে জেলার বিভিন্ন থানায় পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ বাঁধে। দফায় দফায় সংঘর্ষে হবিগঞ্জ শহরসহ বিভিন্ন এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিভিন্ন স্থানে নির্যাতন ও হত্যার শিকার হন পুলিশ সদস্য। বানিয়াচংয়ে পুলিশের সাথে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষ ও থানায় আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। এতে এক পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে হত্যাকান্ডের শিকার হন পুলিশ সদস্যরা। যে কারনে ১১ দফা দাবী নিয়ে কর্মবিরতির উদ্যোগ নেয় পুলিশ। আর এতে অচল হয়ে পড়ে সারা দেশের পুলিশী কার্যক্রম। যে কারণে থানায় আনসার সদস্য ও সেনাবাহিনীকে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেয়া হয়।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় সেবা নিতে আসা এক যুবক জানান, সদর থানার কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকেই থানায় সেবা গ্রহীতারা আসতে শুরু করেছেন। তিনি নিজেও একটি কাজে থানায় এসেছেন।
থানায় আগত এক নারী জানান, তিনি মামলা সংক্রান্ত কাজে গত কয়েকদিন থানায় এসেছেন, কিন্তু কাউকে পাননি। আজ থানায় এসে পুলিশ সদস্যদের পেয়েছেন এবং তার কাজটি শেষ করতে পেরেছেন। তিনি বলেন, পুলিশ কাজে না থাকলে যে কতটা ভোগান্তিতে পড়তে হয় তা আমি গেল কয়েকদিনে বুঝেছি।
পুলিশ সুপার মোঃ আক্তার হোসেন বলেন, বানিয়াচং থানা ছাড়া জেলার সবকটি থানায় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, যেহেতু বানিয়াচং থানার পুরো ভবনটি পুড়ে গেছে এবং পুলিশের সাথে জনগণের দূরত্ব রয়েছে তাই নতুন পুলিশ সদস্যদের সেখানে নিয়োগ দেয়া হবে।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি নূরে আলম জানান, আমরা আমাদের থানার কার্যক্রম শুরু করেছি। দ্রুত পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যক্রম শুরু হবে। তিনি বলেন, আমরা আমাদের সাধ্যমতো জনগণকে সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছি।