\ এম এ মজিদ \
ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রতিশোধ পরায়ন হলেও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ পরায়ন হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ঋণ করেই হোক আর ট্যাক্সের টাকায়ই গড়া হোক রাষ্ট্রের সব স্থাপনা জনগণের। ব্যক্তি এবং রাষ্ট্র যে এক নয় তা অনেক সময় আমরা ভুলে যাই। স্থাপনা কিংবা রাষ্ট্র আপনার বিরুদ্ধে কোনো প্রতিহিংসা চরিতার্থ করেনি। একনাগাড়ে ১৬/১৭ বছর যে আপনার বিরুদ্ধে অত্যাচার নির্যাতন, খুন গুম, বিচারিক হত্যা, বছরের পর বছর মাটিরে নিচে বিশেষভাবে তৈরী আয়নাঘরে আটকে রাখার মতো জঘন্য অপরাধ করেছে তা রাষ্ট্রের কোনো স্থাপনা করেনি, ব্যক্তি করেছে। আপনি সব ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে থাকলেন রাষ্ট্রের স্থাপনা ভেঙ্গে। আজ যা ভাঙছেন কাল তা আপনাকেই গড়তে হবে। সেই বোধ শক্তি না থাকলে দেশটা আরও পিছিয়ে যাবে। মেট্রোরেল থেকে সংসদ ভবন, থানা কম্পাউন্ড থেকে ডিসি অফিস, জেলা পরিষদ ভবন, নগর ভবন, টিভি ভবন, মন্ত্রণালয়, সচিবালয় সবকিছু গুড়িয়ে দিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে কার ক্ষতি করছেন আপনি? দিন শেষে হিসাব করে দেখেন, সেই ক্ষতি আপনারই। কয়েকদিন পর পরিস্থিতি শান্ত হলে সিভিল প্রশাসন বা পুলিশকে বা অন্য অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারিদেরকে নিজেদের কার্যালয়ে অবস্থানের জন্য আসবাবপত্রসহ ভবন তৈরী করে দিতে হবে আপনাকেই। ৪ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি। ৫ আগস্ট একদিনে ক্ষতি হয়েছে আরও প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার। ১৬ জুলাই থেকে পরিস্থিতি শান্ত হওয়া পর্যন্ত অন্তত ১ লাখ কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে বাংলাদেশের। এসব হচ্ছে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনে সংশ্লিষ্টদের ধারণা। বাস্তবে আর্থিক ক্ষতি এর চেয়ে বেশি হতে পারে। আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির হিসাব শতশত মানুষের জীবন প্রদীপ নিভে যাওয়ার ক্ষয়ক্ষতির হিসাবের বাহিরে। শেখ হাসিনার পতন ছাত্র জনতার একটি মাত্র বিজয় হতে পারে। সব চেয়ে বড় বিজয় হতে হবে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা, দেশকে স্থিতিশীল রাখা। মনে রাখতে হবে বাংলাদেশের দিকে নেকড়ে দৃষ্টি রয়েছে বড় বড় পরাশক্তির। সবাই শান্ত হোন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষনে রাখুন।
লেখক ঃ
আইনজীবী ও সংবাদকর্মী
হবিগঞ্জ ৬ আগস্ট ২০২৪
০১৭১১-৭৮২২৩২