স্টাফ রিপোর্টার \ দীর্ঘ এক যুগ ধরে নিখোঁজ বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী। নিখোঁজ হলেও সিলেট ও হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির রাজনীতিতে সবসময় ‘দৃশ্যমান’ তিনি। নানা সময় আলোচনায় এসেছে তার নাম। গতকাল মঙ্গলবার আয়নাঘরের সন্ধান লাভের পর আবারও তুমুল আলোচনায় তিনি। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সিলেটজুড়ে আলোচনায় নিখোঁজ বিএনপির এই প্রভাবশালী নেতা। ইতোমধ্যে তার মুক্তি চেয়ে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা জোড় দাবি তুলেছেন। তার নির্বাচনী এলাকা বিশ্বনাথ-ওসমানীনগরেও সরকার পতনের পর বিজয় মিছিলে ইলিয়াস আলীর মুক্তি দাবি করে স্লোগান দেয়া হয়। অনেকেই মনে করছেন, ইলিয়াস আলী সদ্য পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের ‘আয়নাঘরে’ বন্দি রয়েছেন।
এ ব্যাপারে ইলিয়াস আলীর স্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা বলেন, আয়না ঘরের অনেকে ফেরত আসছে। আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দিন। আমরা তাকে সুস্থ অবস্থায় ফেরত দেওয়ার দাবি করছি।
গতকাল মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক রোষানলে পড়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এম. ইলিয়াস আলীসহ যেসকল নেতাকর্মী গুম হয়েছেন তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়ার জোড় দাবি করছি। পাশাপাশি দীর্ঘ ১৫ বছরে দলের যেসব নেতাকর্মী ও ছাত্রজনতাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি ও সকল মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল মধ্যরাতে রাজধানীর বনানী এলাকা থেকে নিখোঁজ হন বিএনপির তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলী ও তার গাড়িচালক আনসার আলী। পরদিন মহাখালী সাউথ পয়েন্ট স্কুলের সামন থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় তার ব্যবহৃত প্রাইভেটকার উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সরকার ইলিয়াসকে গুম করে রেখেছে। তার মুক্তি চেয়ে সারাদেশে কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। সিলেটেও কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলে দলটি। হরতাল-অবরোধ চলাকালে বিশ্বনাথে পুলিশের গুলিতে মারা যান তিন বিএনপি কর্মী। এক পর্যায়ে আন্দোলন স্থবির হয়ে যায়। থমকে যায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্ধার তৎপরতাও। এরপরও ইলিয়াস আলীর অপেক্ষায় প্রহর গুনেন পরিবার ও দলীয় নেতাকর্মীরা।