আবুল কালাম আজাদ, চুনারুঘাট থেকে ॥ চুনারুঘাটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ঈদে রেকর্ড পর্যটকের ভীড় জমেছে। অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে ঈদুল ফিতরের টানা ছুটিতে এবার সবচেয়ে বেশি পর্যটক এসেছেন চুনারুঘাটে। বিশেষ করে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ও চা বাগানের পথে প্রচুর পর্যটক লক্ষ্য করা গেছে। সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে ঈদের ৪ দিনে প্রায় ২ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। ঈদের দিন সকাল ১০টার পর থেকেই সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের বন পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে। শুধু সাতছড়িই নয়, পুরাতন মহাসড়কের চুনারুঘাট থেকে তেলিয়াপাড়া পর্যন্ত চা বাগানের পথে পথে পর্যটকের ভীড় ছিল চোখে পড়ার মতো। রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্য, গ্রীণল্যান্ড পার্ক, রামগঙ্গা ব্রীজ পয়েন্ট, পরীবিল ও শাপলা বিলসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে স্মরণকালের রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকদের ভীড় ছিল।
সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে গিয়ে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকদের পদভারে মুখর হয়ে উঠেছে এ উদ্যান। ছোট বড় সব বয়সী পর্যটকদের আনাগোনা দেখা গেছে। টানা ছুটি থাকায় পর্যটকের আগমন বেশি লক্ষ্য করা যায়। পর্যটকদের ভীড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে পুলিশ, আনসার, বন বিভাগ ও ভলান্টিয়ারদের। চুনারুঘাট থেকে সাতছড়ি পর্যন্ত চা বাগানের পয়েন্টে পয়েন্টে পুলিশ টহল থাকার কারণে এবার বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি। অথচ গত বছর এ সড়কে একাধিক পর্যটকের প্রাণহানি ঘটেছিল। এবার ডিজে পার্র্টির উৎপাত ছিল কম, তবে বাইকারদের দৌড়াত্ম্য ছিল বেশি।
সরজমিনে দেখা যায়, শুক্রবার বিকেলে চা বাগানের ভাঁজে ভাঁজে মানুষ আর মানুষ। রাস্তায় ছিল যানজটও। পরিবার পরিজন নিয়ে বেরিয়েছেন অনেকেই। শিশু কিশোররাও চা বাগান ও ছড়াগুলোতে মনের আনন্দে খেলা করেছে। চা বাগানের পথে পথে উৎসবের আমেজ লক্ষ করা গেছে। পথে পথে তৈরী হয়েছে নতুন নুতন অস্থায়ী দোকানপাট। যেন সারা রাস্তাই মেলার পসরা বসেছে।
সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের সিএমসি কমিটির সদস্য সচিব ও রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন, ঈদের দিন পুলিশ, বন বিভাগ এবং আমাদের ব্যবস্থাপনা কমিটির সার্বক্ষনিক তদারকির কারণে এবার রেকর্ড রাজস্ব আদায় হয়েছে। ঈদের দিনেই এসেছে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। পরের ৩দিনে আরো লাখ টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। যা অতীতে হয়নি।
চুনারুঘাট থানার ওসি হিল্লোল রায় জানান, পুলিশ আন্তরিক ভাবে কাজ করেছে। বিশেষ করে চুনাঘাট থেকে সাতছড়ি পর্যন্ত ৫টি টিম কাজ করেছে। ফলে এবার ঈদের ছুটিতে কোন দুর্ঘটনা কিংবা কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব আলম মাহবুব বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমরা পুলিশের পাশাপাশি আনসার নিয়োগ দিয়েছি। পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণে আমরা সচেষ্ট ছিলাম।
সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন জানান, আমি চুনারুঘাটকে পর্যটনের নগরী করতে চাই। এর অংশ হিসেবে প্রথমেই ঈদকে সামনে রেখে রামগঙ্গা ব্রীজ ও সুরমা আমতলী পয়েন্টে দুটি পরিত্যাক্ত যাত্রী ছাউনিকে আকর্ষণীয় নির্মাণশৈলী দিয়ে পর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তর করেছি। সামনে আরো কাজ দেখতে পাবেন।