আমি নিজে ছেলেকে খুনিদের হাতে তুলে দিলাম বলে মূর্ছা যাচ্ছেন মা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে কাজী আবিদুর রহমান মাহিন (১৮) নামে এক মাদরাসা ছাত্রকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। গত বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৮টার দিকে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। মাহিন উপজেলার নিজগাঁও গ্রামে কাজী আব্দুল মতিনের ছেলে। তিনি এবার শায়েস্তাগঞ্জ মডেল কামিল মাদরাসা থেকে দাখিল পরীক্ষা দিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার ঈদের দিন রাত ৮ টায় দুই যুবক মাহিনের বাড়ি এসে তাকে ডেকে শায়েস্তাগঞ্জ রেল জংশনের পাশে দীঘির পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করলে সে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় হামলাকারীরা তাকে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে পথচারীরা মাহিনকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মাহিনের স্বজনরা জানান, মোজাহিদ ও জুনাইদ নামে দুই যুবক মাহিনকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। তারা হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এদিকে বসতঘরে লুটিয়ে পড়ে বিলাপ করছিলেন মাহিনের মা রোকেয়া বেগম। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে মাহিনের সঙ্গে প্রতিবেশী মোজাহিদ ও জুনাইদের ঝগড়া হয়। এজন্য মাহিন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। সেই ক্ষোভে দুজন ডেকে নিয়ে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে।
তিনি আরও বলেন, মাহিন ঈদের আগের দিন ফুটপাতের দোকান থেকে তিনটি পুরাতন পাঞ্জাবি কিনেছিল। সেগুলোর একটিও পরতে পারেনি। ‘আমি নিজে ডেকে আমার ছেলেকে খুনিদের হাতে তুলে দিলাম’ বলে রোকেয়া খাতুন বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মাহিন পড়াশোনার পাশাপাশি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। এলাকার লোকজন তার শিষ্টাচারের প্রশংসা করেন।
শায়েস্তাগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) উত্তম দাশ জানান, মাহিনকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।