আবুল কালাম আজাদ, চুনারুঘাট থেকে ॥ হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার লস্করপুরে ভ্যালীতে ২০২৩ সালে চায়ের রেকর্ড উৎপাদন হয়েছে। ২০২২ সালের চেয়ে ২০২৩ সালে ৪১ শতাংশ উৎপাদন বেড়ে চায়ের রেকর্ড উৎপাদন হয়েছে প্রায় ১ কোটি ২৭ লাখ কেজি। অনুকুল আবহাওয়া থাকায় এবং রোগ বালাই কম থাকায় ভ্যালীর ১৭টি চা বাগানে গেল বছর এমন উৎপাদন বেড়েছে। কিন্তু চায়ের মূল্য কমে যাওয়ায় ভ্যালীর অনেক বাগান লোকসানে পড়েছে।
চা বাগান ও ভ্যালী সুত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনসহ নানা কারণে ভ্যালীর ১৭ চা বাগানে উৎপাদন হয়েছিল ৯৮ লাখ ৯৭ হাজার ৪শ ৩১ কেজি চা। কিন্তু অনুকুল আবহাওয়া ও রোগ বালাই কম থাকা এবং বাগান কর্তৃপক্ষের নানা পদক্ষেপের কারণে ২০২৩ সালে চায়ের মওসুমে ভ্যালীতে উৎপাদন বেড়ে দাঁড়ায় ১ কোটি ২৬ লাখ ৯১ হাজার ৭শ ৯৪ কেজি। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২৮ লাখ কেজি বা ৪১.৯২ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উৎপাদন বেড়েছে ডানকান ব্রাদার্স এর চান্দপুর চা বাগানে। এ বাগানে উৎপাদন ২০২২ সালের তুলনায় ১শ শতাংশ বেড়েছ্।ে লস্করপুর চা বাগানে ৬৭ শতাংশ এবং রেমা চা বাগানে ৫০ শতাংশ চা বেশি উৎপাদন হয়েছে। সবগুলো বাগানে উৎপাদন বাড়লেও ২০২৩ সালে ভ্যালির একমাত্র নোয়াপাড়া চা বাগানে ৩ শতাংশ চা কম উৎপাদন হয়েছে। একইভাবে ২০২১ সালে ভ্যালিতে উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ২ লাখ কেজি।
বিগত কয়েক বছর ধরেই ভ্যালিতে চায়ের উৎপাদন কোন বছর কম এবং কোন বছর বাড়ছিল। তবে ২০১৯ সালেও ভ্যালীতে চায়ের উৎপাদন প্রথমবার বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ১ কোটি ২২ লাখ কেজি।
২০২২ সালে ভ্যালিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২১৪ সেঃমিটার হলে ২০২৩ সালে ভ্যালীতে বৃষ্টিপাত হয়েছিল ২০৮সেঃ মিটার। কিন্তু চা উৎপাদনে অনূকুল আবহাওয়া ও তাপমাত্রা সহনীয় মাত্রায় ছিল। ফলে উৎপাদন বেড়েছে আনুপাতিক হারে। দেশে চায়ের আনুপাতিক উৎপাদন বাড়লেও বাড়েনি চায়ের মুল্য। গত এক দশক ধরেই চায়ের নিলামে গড় প্রতিকেজি ২শ টাকার কাছাকাছি উঠানামা করছে। এতে ভ্যালির কোন কোন চা বাগান লোকসান দিচ্ছে। বিশেষ করে দেউন্দি টি কোম্পানীর ৪টি বাগান গত তিন বছর ধরেই লোকসান দিয়ে এখন বাগান চালাতে পারছে না। শ্রমিকদের এরিয়া ও বেতন ভাতা বকেয়া পড়ছে।
ভ্যালীর সভাপতি এনটিসি’র মালিকানাধীন চন্ডিছড়া চা বাগানের ম্যানেজার ইউসুফ খান জানান, আবহাওয়া এবং বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আনুপাতিক এবং সকলের সমন্বিত চেষ্টার কারণে ভ্যালিতে উৎপাদন বেড়েছে। তবে চায়ের মুল্য এখন অনেক কম, তাই চা শিল্প ক্ষতির আশংকায় রয়েছে।