স্টাফ রিপোর্টার ॥ বানিয়াচং উপজেলার কাগাপাশা ইউনিয়নের ইছবপুর গ্রামে কুশিয়ারা নদী দখলদারের কবল থেকে উদ্ধারে নির্দেশনা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক দেবী চন্দ। জেলা প্রশাসনের নির্দেশের প্রেক্ষিতে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি সরজমিনে গিয়ে দেখতে উপজেলা মৎস্য অফিসারকে তাগিদ দেন। শুক্রবার দুপুরে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাস্তব অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে গ্রামবাসীকে প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ^াস দেন। শুক্রবার দুপুরে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইছবপুর গাংপাড় গ্রামে যান এবং গ্রামবাসীর সাথে কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, নদী কোনোদিন লিজ হয় না। লিজ দেয়া যায় না। যে বা যারা লিজ এনেছে মর্মে প্রচার করে দখল করে রেখেছে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেই সাথে নদীর পানি ব্যবহারে কেউ বাঁধা দিলে তাৎক্ষণিক তাকেসহ উপজেলা প্রশাসনকে জানানোর জন্য গ্রামবাসীকে পরামর্শ দেন তিনি।
জানা যায়, কোনো নদী যে ইউনিয়ন বা গ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে যায়, সে এলাকার লোকজনই তাতে মাছ ধরা, গরু ছাগল ধৌত করা, নিজেরা গোসলসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে থাকেন। বর্ষা মৌসুমে কাগাপাশা ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কুশিয়ারা নদীর পানি কৃষকরা ব্যবহার করলেও গত কয়েক বছর ধরে শুকনো মৌসুমে তারা ওই নদীর পানি ব্যবহার করতে পারেন না। ফলে পানি ব্যবহার করতে না পারায় কয়েকশ একর জমির ফসল উৎপাদনে তাদেরকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পোহাতে হয়। এছাড়া নদীতে গোসল, গরু-বাছুর ধৌত করা কিংবা মাছ ধরা কোনো কিছুই তারা করতে পারেন না। কাগাপাশা ইউনিয়নসহ আশপাশের কৃষকদের জমি চাষাবাদসহ দৈনন্দিন কাজে কুশিয়ারা নদীর পানি খুবই প্রয়োজনীয় হলেও কতিপয় লোক ওই নদী খাস কালেকশনের মাধ্যমে লিজ এনেছে প্রচার করে গ্রামবাসীকে নদীর পানি ব্যবহারে বাঁধা দেয়। কৃষকদের অভিযোগ- পশ্চিমের বন্দ, গুল, পূবের বন্দ, হরিগোল ও কালাইন্যা বন্দের শত শত কৃষক কতিপয় লোকের বাঁধার কারণে কৃষিকাজে কুশিয়ারা নদীর পানি ব্যবহার করতে পারেন না। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে ওই ইউনিয়নের কয়েক শতাধিক কৃষক জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে জানা যায়, ইউছবপুর মৌজার আরএস ১নং খতিয়ানভুক্ত আরএস ৮৫১ দাগের নদী রকম ভূমি যা কুশিয়ারা নদী নামে পরিচিত। এ নদী দিয়ে এখনও নৌকা ও লঞ্চ চলাচল করে। ওই নদীর পানি ইছবপুর গাংপাড় এলাকার কৃষকরা তাদের পূর্ব পুরুষের আমল থেকে ব্যবহার করে এলেও গত কয়েক বছর ধরে ওই নদী খাস কালেকশন আনা হয়েছে মর্মে প্রচার করে গ্রামবাসীকে উক্ত নদীর পানি ব্যবহারে একই এলাকার কতিপয় লোক বাধাঁ প্রদান করছে। তারা নদী দখল করে মাছের অভয়ারণ্য (দলকাটা) ফেলেছে। যে কারণে নদীর পাড় সংলগ্ন গ্রামবাসী মাছ ধরা তো দূরের কথা, এর পানিও ব্যবহার করতে পারছেন না। শত বৎসরের অধিক সময় ধরে কৃষিকাজে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এ নদীর পানি ব্যবহারে বাঁধা দেয়ায় গ্রামবাসী তথা কৃষকরা অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুুখিন হয়েছেন। আসন্ন শুকনো মৌসুমে ওই নদীর পানি বাঁধ দিয়ে উল্লেখিত লোকজন মাছ ধরবে। যে কারণে নদীতে পানি না থাকলে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।