পৌরসভার লৌহ দূরীকরণ প্রকল্পের উদ্বোধন উপলক্ষে উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশ
উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই ॥ আবু জাহির এমপি
স্টাফ রিপোর্টার ॥ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। হবিগঞ্জ পৌরসভার লৌহ দূরীকরণ প্রকল্প-৩ এর উদ্বোধনী উপলক্ষে উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম একথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, এখন বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮২৪ ডলার। গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বেড়েছে ২ হাজার ১২৪ ডলার। দেশে এত উন্নয়ন হওয়ার পরও একটি মহল হরতাল, অবরোধের মাধ্যমে দেশে অরাজকতা সৃষ্টির পায়তারা করছে। দেশের অর্থনীতিকে পিছিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। তিনি জনপ্রতিনিধিদের নিজ নিজ এলাকায় কাজ করার আহবান জানান। মন্ত্রী আরও বলেন, যারা জনগণের ভাগ্য উন্নয়নের পথে বাঁধা সৃষ্টি করতে চায়, তাদের সে চেষ্টা যাতে সফল না হয় সেজন্য কাজ করতে হবে। বৃহত্তর সিলেটের অনেক মর্যাদাশীল মানুষ দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি এই অঞ্চলের মানুষ অঙ্গিকারাবদ্ধ। সিলেট বিভাগের উন্নয়নের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করা হয় যাতে সিলেট বিভাগের প্রতিটি জেলার মানুষের জীবনমান উন্নত হয়।
হবিগঞ্জ শহরের শ্মশানঘাট রোডে নবনির্মিত লৌহ দূরীকরণ প্রকল্পের পাশে উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হবিগঞ্জ পৌরসভা। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম একজন সৃজনশীল ও কর্মবীর মানুষ। গত ৫ বছরে তিনি এই মন্ত্রণালয়ে অনেকটা গতি এনে দিয়েছেন। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য শেখ হাসিনার বিকল্প নেই, নৌকার বিকল্প নেই। তিনি বলেন- ‘লৌহ দূরীকরণ প্ল্যান্ট আরো ১০ বছর আগেই হওয়ার কথা ছিল। আইনী জটিলতার মধ্যে রেখে এই কাজের টেন্ডার বাতিল করা হয়েছিল। আমি উদ্যোগ নিয়ে মাননীয় মন্ত্রীর সাথে কথা বলে এই প্রকল্পের কাজ শুরু করি।’
সভাপতির বক্তব্যে হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আতাউর রহমান সেলিম বলেন- ‘মন্ত্রী আমাকে বলেছেন পৌরসভার নিজস্ব সম্পত্তি কাজে লাগাতে। আমি এই শ্মশানঘাট এলাকায়-ই দুইটি মার্কেট পৌরসভার নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করেছি। নৌকার প্রতিনিধি হিসেবে আমি নজির সুপার মার্কেটের সামনে পৌরসভার প্রায় ৫০ কোটি টাকার জমি দখলমুক্ত করেছি। এই জমিটি দীর্ঘদিন যাবত পৌরসভার বেদখল ছিল। আমরা মনে করি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এদেশের মানুষ ভাল থাকবে।’
উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন হবিগঞ্জ-২ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলমগীর চৌধুরী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আলি আখতার হোসেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার হবিগঞ্জের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান, পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাবেদ ইকবাল চৌধুরী, পৌর কাউন্সিলর মোঃ জাহির উদ্দিন, গৌতম কুমার রায়, প্রিয়াংকা সরকার ও শেখ সুমা জামান প্রমূখ।
সমাবেশের আগে হবিগঞ্জ শহরের শ্মশানঘাট রোডে ফলক উন্মোচন করে পৌরসভার লৌহ দূরীকরণ প্রকল্প-৩ এর উদ্বোধন করেন মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। এ সময় সবাই মোনাজাতে অংশ নেন।
উল্লেখ্য, ৩৭টি শহরে পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় হবিগঞ্জ শহরের শ্মশানঘাট এলাকায় ৯ কোটি ২৯ লাখ ১৯ হাজার টাকা ব্যয়ে পানি সরবরাহ কেন্দ্রের কাজ শুরু করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। এটি হবিগঞ্জ পৌরসভার ৩য় পানি সরবরাহ প্রকল্প। এর নির্মাণকাজ শেষ হয় গত ৩০ জুন। এই প্রকল্পে ঘন্টায় ৩৫০ ঘনফুট পানি পরিশোধনের ক্ষমতা রয়েছে। এ কেন্দ্র বাস্তবায়নে পৌরসভার ৭০ ভাগ এলাকার বাসিন্দা লৌহ দুরীকরণ প্রকল্পের আওতায় আসবেন।