মায়ের অনৈতিক কাজ দেখে ফেলায় দুই সন্তানকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পুত্রবধূর বিরুদ্ধে অনৈতিক কার্যকলাপ ও হয়রানির অভিযোগ এনে নাতি-নাতনিকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শাশুড়ি। গতকাল শনিবার বিকালে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে তিনি লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন।
হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লস্করপুর ইউনিয়নের চরহামুয়া গ্রামের রাহেলা আক্তার তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, চুনারুঘাট উপজেলার কাছিশাইল গ্রামের আব্দুল গণি তার স্বামী ছিলেন। কিন্তু তার সাথে বিচ্ছেদ হয়ে গেলে তিনি সন্তান ফজলু মিয়াকে নিয়ে পিত্রালয় চরহামুয়া গ্রামে চলে আসেন। এখানেই তার পুত্র ফজলু মিয়া বড় হয়। এক পর্যায়ে সে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে ২০০৬ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ৭৫ হাজার টাকা দেনমোহরে কাছিশাইল গ্রামের রুজিনাকে বিয়ে করে সংসার জীবন শুরু করে। দাম্পত্যজীবনে তাদের কোলজুড়ে তাহমিনা আক্তার (১৫), জিসান মিয়া (১২), ফাহিমা আক্তার (৬) ও জিহাদ মিয়া (৪) নামে ৪টি সন্তান জন্ম গ্রহণ করে।
এদিকে রাহেলার সাবেক স্বামী আব্দুল গণি তার ২য় পক্ষের স্ত্রীর সন্তানদের কথায় ছেলে ফজলু মিয়াকে স্ত্রী-সন্তানসহ তার কাছিশাইলস্থ গ্রামের বাড়ি নিয়ে যান। সেখানে তারা আলাদাভাবে বসতঘর স্থাপন করে দীর্ঘদিন সংসার করে। এক পর্যায়ে জীবিকার তাগিদে ফজলু মিয়া ওমান চলে যায়। এ সুযোগে তার স্ত্রী রুজিনা আক্তার সকলের অগোচরে বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। বিষয়টি নিয়ে রাহেলার সাবেক স্বামী আব্দুল গণিসহ নাবালক দুই সন্তান তাহমিনা ও জিসান প্রতিবাদ করে। এতে রুজিনা তাদের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়। বিষয়টি লোক মারফত ওমানে থাকা রুজিনার স্বামী ফজলু মিয়া জানতে পারলে দুজনের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে ফজলু মিয়া দেশে এলে ২০২২ সালের ২২ মে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিট করে ভবিষ্যতে অনৈতিক কর্মকা- করবে না এবং শ^শুর-শাশুড়িসহ সকলের সাথে মিলেমিশে চলাচল করবে মর্মে অঙ্গীকার করলে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক স্বাভাবিক হয় এবং ফজলু মিয়া ফের ওমান চলে যায়। সে চলে যাওয়ার পর রুজিনা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে সকলেই আবারও নিষেধ করে। কিন্তু সে তা অমান্য করায় ওমানে থাকা ফজলু মিয়া মোবাইলের মাধ্যমে তাকে তালাক প্রদান করে।
রাহেলা আক্তারের লিখিত অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, রুজিনার পরকিয়াসহ অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করলে সে সুযোগ বুঝে বাড়িতে থাকা সকল মালামাল কৌশলে তার পিত্রালয়ে নিয়ে গেলেও শ^শুর আব্দুল গণিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে জেলা লিগ্যাল এইডে চুরির মামলা করে।
সাম্প্রতিক সময়ে রুজিনার পরকিয়া সম্পর্কের বিষয়টি তার দুই সন্তান তাহমিনা ও জিসানের কাছে ধরা পড়ে। তারা মোবাইলে ছবি তোলে রাখলে তাদের প্রতি ক্ষিপ্ত হয় রুজিনা এবং সন্তানদের মারধোর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। এমনকি জিসানকে বেধে পানিতে ফেলে দেয়। নিরূপায় হয়ে নাবালক দুই শিশু থানা পুলিশের কাছে গেলে পুলিশ তাদেরকে স্থানীয় শামীম মেম্বারের জিম্মায় দেয়। বর্তমানে দুই শিশু এলাকার মুরুব্বিদের জিম্মায় দাদি রাহেলা খাতুনের নিকট রয়েছে। অপর দুই শিশু তাদের মায়ের কাছে থাকলেও রুজিনা তার অপকর্ম ঢাকতে পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে রাহেলাসহ তার শ^শুর এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করছে। রাহেলা আক্তার এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি সত্যতা উদঘাটনের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।