পাঠকের কলাম…
অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মখলিছুর রহমান
মেট্রিক পরীক্ষার পেপার ধান ক্ষেতে পাওয়া যাওয়ায় বিষয়টি একটি মুখরোচক এমনকি একটি দুঃখজনক সমালোচনায় পরিণত হয়েছিল। দিন তারিখ সঠিক মনে নেই তবে এখানে নয়, ঘটনাটি ঘটেছিল আমাদের মতো অন্য কোনো এক দুর্ভাগা দেশে। উদাহরণ স্বরূপ উল্লেখ্য আমাদের মতো অন্য আরেকটি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার চরম নৈরাজ্য সম্পর্কে আলোচনায় আসা যাক। একজন শিক্ষকের পক্ষে নিজের প্রাইভেট টিউশনি এবং কোচিং বাণিজ্য জমজমাট রাখতে গিয়ে নিজের পক্ষে সঠিকভাবে পরীক্ষার পেপার দেখা সম্ভব হয়ে উঠে না। শুনা যায় এক শ্রেণির টাকা লোভী শিক্ষক টাকার লোভে প্রলুদ্ধ হয়ে টিউশনি ও কোচিং বাণিজ্যের ব্যস্ততায় পরীক্ষার খাতা না দেখে শালা-সমন্ধিক, পাড়া-মহল্লার বেকার ছাত্র এমনকি আন্ডার মেট্রোকোলেইট গৃহবধু স্ত্রীকে দিয়েও পরীক্ষার খাতা দেখিয়ে থাকেন। পরিণতিতে মেধাবী, প্রতিভাবান, ব্রিলিয়েন্ট স্টুডেন্টরা আশানুরুপ রেজাল্টের ব্যাপারে পরীক্ষদের চরম খামখেয়ালীপনার শিকার হয়ে থাকেন। স্কলার স্টুডেন্টরা যথাযথ নাম্বার না পাওয়ায় মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে এবং উচ্চ শিক্ষার সুযোগ থেকেও হয় বঞ্চিত। এমতাবস্থায় পরীক্ষার খাতা রি-একজামিন করার সুযোগ থাকলেও সঠিক প্রসেসিং এর অভাবে এবং বিভিন্ন শর্তাদির কারনে সেটাও একটি অসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় বটে। আশ্চর্য্য হলেও সত্য যে জনৈক সম্মানিত শিক্ষককে চলন্ত ট্রেনে বসে পরীক্ষার খাতা দেখতে দেখা যায়। এক সময় তিনি অন্যমনষ্ক হয়ে পড়লে হঠাৎ একটি ধমকা বাতাসে হাতের খাতাটি জানালা দিয়ে উড়ে গিয়ে একটি ধান ক্ষেতে পড়ে যায়। যাইহোক এখন আসল কথা হলো এই যে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে তথাকথিত দেশের জাতির ভাগ্য নির্মাতাদের দায়িত্ব জ্ঞান নিয়ে। আমরা কোন জগতে বাস করি। আমরা যারা ছাত্রদের গার্জিয়ান এবং সম্মানিত শিক্ষা গুরু আমরা আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে, ছাত্রদের জীবন নিয়ে কতটুকু আন্তরিক বা কতটুকু চিন্তা ভাবনা করি। বলাবাহুল্য ছাত্রদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ জীবন অনেকটা নির্ভর করে পরীক্ষকের সঠিকভাবে পরীক্ষার খাতা পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়নের উপর। একজন পরীক্ষার্থীকে ভুলবশতঃ এক-দুই নাম্বার বেশী দেওয়া হোক এতে তেমন একটা যায় আসে না। যতটুকু ক্ষতি হয় একজন সর্বোচ্চ নাম্বারধারী ভাল ছাত্রকে ভুলবশত তার প্রাপ্য নম্বর থেকে বঞ্চিত করলে যতটুকু ক্ষতি হয় তাহা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নহে। সম্মানের দিক থেকে শিক্ষকতা এমন একটি পেশা যা তুলনাহীন। ছাত্ররা শিক্ষদের পাঁ ছুঁয়ে কদমভুছি করে দোয়া নেয় আর্শিবাদ নেয়। কারণ শিক্ষকরা জাতির মেরুদন্ড মানুষ গড়ার কারিগড়। সমাজের দেশের সবচেয়ে সম্মানিত দায়িত্বশীল ব্যক্তি। এই সমস্ত কথা মাথায় রেখেই শিক্ষদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে বদ্ধ পরিকর হওয়া উচিত। উচিত নয় কি?
লেখক ঃ আইনজীবী ও কলামিস্ট, মোবাঃ ০১৬৮৬-৭৩৫৮০৪
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com