জি কে গউছ ও তার দুই ভাই মাধবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ মোঃ শাহজাহান মেয়র হাবিবুর রহমান মানিক মেয়র ফরিদ আহমেদ অলি বিএনপি যুবদল ছাত্রদল অঙ্গ সংগঠনের ৯০ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ ১২০০ জন আসামী ॥ শায়েস্তাগঞ্জের পৌর কাউন্সিলর বিএনপি নেতা আব্দুল জলিলসহ ১৬ জন কারাগারে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগরে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক পদত্যাগী মেয়র আলহাজ¦ জি কে গউছকে প্রধান আসামি করে পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। উভয় মামলার এজাহারে ৯০ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ প্রতিটি মামলায় ৬০০ জনকে অজ্ঞাত করে মোট ১২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এদিকে গতকাল সোমবার রাতে আটক শায়েস্তাগঞ্জের পৌর কাউন্সিলর বিএনপি নেতা আব্দুল জলিলসহ ১০ জনকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগে রবিবার আরও ৬ জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার এসআই খোরশেদ আলম বাদী হয়ে পুলিশ এসল্ট ও এসআই আব্দুল ওয়াহেদ গাজী বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে মামলা দুটি করেন।
মামলার আসামীরা হলেন- হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রদল সভাপতি শাহ রাজিব আহমেদ রিংগন, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মাহবুব, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এমদাদুর রহমান ইমরান, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক পৌর কাউন্সিলর আবুল হাসিম, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুবেল আহমেদ চৌধুরী, হবিগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সৈয়দ মুশফিক আহমেদ, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মহিবুল ইসলাম শাহীন, জালালাবাদের মুর্শেদ আলম সাজন, পৌর কাউন্সিলর সফিকুর রহমান সিতু, ইনাতাবাদের টিপু আহমেদ, জালাল আহমেদ, অধ্যাপক এনামুল হক, আব্দুল আউয়াল, বাচ্চু মিয়া, যশেরআব্দার জয়নাল মিয়া, বহুলার সুমন মিয়া, পাটলী গ্রামের আব্দুল মতিন, বাঘআছড়া গ্রামের কাউছার মিয়া, চারিনাও গ্রামের আব্দুল খালেক, নাতিরপুরের সাইফুল ইসলাম মুন্না, জি কে গউছের ভাই জি কে গাফফার, জালালাবাদ নোয়াগাঁও’র কুতুব উদ্দিন জুয়েল, বহুলার হাবিবুর রহমান হাবিব, আব্দুল আহাদ, সোহেল মিয়া, জুবায়ের মিয়া, জি কে গউছের ছোট ভাই গোলাম মাওলা, বড় বহুলার আব্দুল মান্নান, ইনাতাবাদের এসএম আব্দুল আউয়াল, শায়েস্তানগরের শ্যামল আহমেদ সরদার, বড় বহুলার জিল্লুর রহমান, লাখাই ভাদিকারার শরীফ আহমেদ, পুরাসুন্দার গোলাম সরওয়ার পলাশ, লাখাই বামৈ পূর্ব গ্রামের শাহ আলম গোলাপ, শায়েস্তানগরের জি কে ঝলক, শায়েস্তাগঞ্জ বিরামচরের মিজানুর রহমান, নূরপুরের রাকিবুল হোসেন শান্টু, শায়েস্তাগঞ্জ শাহপুরের শেখ রানা, তালুকড়াই’র জিয়াউর রহমান, লাখাই মুড়িয়াউকের মাহমুদুল হাসান মাহমুদ, চুনারুঘাট বড়াইলের নোমান মিয়া, কৌশিক মিয়া, চন্দনা গ্রামের কুতুব আলী মীর লিটন, চুনারুঘাট ক্রসরোডের আরিফুল ইসলাম আরিফ, চন্দনা গ্রামের আব্দুল মান্নান রুমন, বড়াইলের শাহ শরীফ, বানিয়াচং সাগরদিঘীর পূর্ব পাড়ের সাদিকুর রহমান, শামীম খান, শরীফখানির মুজিবুল হোসেন মারুফ, কুতুবখানির নকিব ফজলে রাকিব মাখন, আমিরখানির মোঃ জহির হোসাইন, মাদারিটুলার মোঃ খালেদ মিয়া, বাগমহল্লার হাজী মোঃ লুৎফুর রহমান, দেওয়ানদিঘীর পাড়ের ফরহাদ হোসেন বকুল, মিয়াখানির মহিবুর রহমান বাবুল, যাত্রাপাশার সালাউদ্দিন ফারুক, মোঃ নাজমুল হোসেন, মহেরের পাড়ার তানিয়া আক্তার, দক্ষিণ নন্দীপাড়ার আনছার উদ্দিন, মজলিশপুরের ফজলে এলাহী, তোপখানার দেলোয়ার হোসেন খান, দোয়াখানীর মোঃ শরীফ উদ্দিন, যাত্রাপাশার শেখ আমজাল হোসেন, শাহজাহান মিয়া, সাগরদীঘির পশ্চিম পাড়ের ওয়াহিদুল মুরাদ, চতুরঙ্গ রায়ের পাড়ার শরীফ উদ্দিন ঠাকুর, আড়িয়ামুগুর গ্রামের গোপাল চন্দ্র দাস, বাগাহাতা গ্রামের মোঃ মঈন উদ্দিন, জাতুকর্ণপাড়ার সোহেল মিয়া, দেওয়ানদীঘির দক্ষিণ পাড়ের সালাউদ্দিন, ইনাতখানীর হাবিবুর রহমান তালুকদার, পূর্ব নন্দীপাড়ার আল আমীন আখঞ্জী, নূরপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া বেলাল, শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ফরিদ আহমেদ অলি, পশ্চিম লেঞ্জাপাড়ার ফাহিম হোসেন, শায়েস্তাগঞ্জ কদমতলী গ্রামের মিজানুর রহমান, দক্ষিণ বড়চর গ্রামের মনিরুল হক রানা, দক্ষিণ লেঞ্জাপাড়ার কামরুল হাসান শিপন, মাধবপুর পৌরসভার মেয়র হাবিবুর রহমান মানিক, মাধবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ শাহজাহান, শায়েস্তাগঞ্জ নিশাপট গ্রামের আব্দুল শহিদ, বহুলা গ্রামের শাহিনুর রহমান শাহিন, যশেরআব্দার শান্ত মিয়া, শায়েস্তানগরের মোজাক্কির হোসেন ইমন, উমেদনগরের শেখ মামুন প্রমূখ।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত শনিবার বিকালে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় পদযাত্রা থেকে পুলিশের উপর অতর্কিত হামলা চালায় বিএনপির নেতাকর্মীরা। এতে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি অজয় চন্দ্র দেবসহ অন্তত ২০ পুলিশ সদস্য আহত হন।
এদিকে গত রবিবার আহত অজয় চন্দ্রকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা জাতীয় চক্ষু হাসপাতালে পাঠানো হয়। অন্য আহতরা হবিগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হবিগঞ্জ পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এম আউয়াল আশঙ্কাজনক অবস্থায় একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন। এ ছাড়া পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে আহত হয়েছেন আরও শতাধিক নেতাকর্মী।
অন্যদিকে গত রবিবার বিকালে বিএনপি-আওয়ামী লীগ সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খলিলুর রহমান জানান, আটককৃতদের কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। এ ছাড়া শহরে ফের সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।