স্টাফ রিপোর্টার ॥ পাওনাদারকে গলাটিপে হত্যার দায়ে এক চা শ্রমিককে যাবজ্জীবন কারাদ- ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদ-ের আদেশ দিয়েছেন হবিগঞ্জের বিজ্ঞ অতিরিক্ত দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক। গতকাল সোমবার বিকেলে তিনি এ রায় ঘোষণা করেন। দন্ডিত আসামী মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর লেবামারা এলাকার মৃত বীরবল সাঁওতালের পুত্র সাধন সাঁওতাল ওরফে বিষ্ণু সাঁওতাল (৪৬)।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০০৬ সালের ১ অক্টোবর দুপুরে একই এলাকার রসুলপুর গ্রামের মৃত ইছব আলীর পুত্র ব্যবসায়ী ইউনুছ আলী (৫৫) চা শ্রমিক সাধন সাঁওতালের কাছে তার বকেয়া পাওনা ৩শ’ টাকা আদায়ের জন্য জগদীশপুর চা বাগানে সাধন সাঁওতালের বাড়িতে যান। সাধন সাঁওতাল ইউনুছ আলীকে তার পাওনা টাকা না দিয়ে তার সাথে তর্কে লিপ্ত হয়। দু’জনের মাঝে তর্ক বিতর্কের এক পর্যায়ে সাধন উত্তেজিত হয়ে ইউনুছ আলীকে গলা চেপে ধরে শ^াসরোধ করে হত্যা করে। পরে সে ইউনুছ আলীর মরদেহ একটি চটের বস্তায় ভরে তার বসত ঘরের মেঝেতে গর্ত করে মাটিতে পুতে রাখে। এ ঘটনায় ইউনুছ আলীর ছোট ভাই মনু মিয়া বাদি হয়ে মাধবপুর থানায় সাধনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পুলিশ সাধনকে গ্রেফতার করলে সাধনের স্বীকারোক্তি মতে তার বসত ঘরের মাটি খুড়ে ব্যবসায়ী ইউনুছ আলীর লাশ উদ্ধার করা হয়। মামলার তদন্ত শেষে আসামী সাধন সাঁওতালের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৩০২/২০১ ধারায় চার্জশীট প্রদান করেন তদন্ত কর্মকর্তা। মামলার বিচারকার্যে ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। দীর্ঘ শুনানি, সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামীর স্বীকারোক্তি, মামলার রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা এবং উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে গতকাল সোমবার হবিগঞ্জের বিজ্ঞ অতিরিক্ত দায়রা জজ ২য় আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মোহাম্মদ ইয়াছির আরাফাত পলাতক আসামী সাধন সাঁওতালকে দোষী সাব্যস্থ করে যাবজ্জীবন কারাদ- ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদ-ের আদেশ দেন। রায় ঘোষণাকালে আসামি পলাতক ছিল। সাধন সাঁওতাল গ্রেফতার অথবা আত্মসমর্পন করার পর হতে এ দন্ডাদেশ কার্যকর হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি হাবিবুর রহমান খাঁন। আসামী পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সফিকুর রহমান চৌধুরী।