স্টাফ রিপোর্টার ॥ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে বানিয়াচঙ্গ উপজেলার বিথঙ্গলে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ গোসাই’র বড় আখড়ার দেবোত্তর সম্পত্তি দখলে নেয়ার জন্য রাতের আধারে গৃহ নির্মাণ করছে ভূমিদস্যুরা। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আশংকা করছেন এলাকাবাসী।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, বিথঙ্গলের হাসনাবাদ মৌজার জেএল নং-১৪৪, আরএসজেএল নং-১৪৯, এস এ খতিয়ান নং-৫, এসএ দাগ নং-১১৭৯, মোয়াজী ৫.১২ শতক; এস এ খতিয়ান নং-২২, এসএ দাগ-১১৭৯, মোয়াজী ২৯ শতক লায়েক পতিত রকম ভূমির প্রকৃত মালিক বিথঙ্গলের ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ গোসাই’র বড় আখড়া। কিন্তু ওই এলাকার আলোচিত আলী হোসেন তার ছেলে বাবুল মিয়া, মইদর মিয়াসহ ২৫ জনের একটি চক্র উল্লেখিত দাগের ভূমিটি দখলে নেয়ার চেষ্টা চালালে আখড়া কমিটির নেতৃবৃন্দ ও আখড়ার ভক্তরা বাধা দেন। কিন্তু ভূমিদস্যুরা বাধা উপেক্ষা করে বেআইনিভাবে ওই জায়গায় অবস্থান করছেন। এদিকে ওই দেবোত্তর সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য আখড়ার মহন্ত শ্রী সুকুমার দাস গোসাই বাদী হয়ে গত ৫ জানুয়ারি হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২৫ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ইসলামপুরের আলী হোসেন তার ছেলে বাবুল মিয়া, মইদর মিয়া, আউয়াল মিয়া, দয়াল মিয়া, মোতালিব মিয়া, পাগলসি গ্রামের আশরাফ উদ্দিন, কুতুব উদ্দিন, শরীফ উদ্দিন, জিয়া উদ্দিন, সাবিনা খাতুন, জলিল মিয়া, হাবিবুর রহমান, আজাদ মিয়া, রইছ মিয়া, আপ্তাব উদ্দিন, ফরিদ উদ্দিন, আজমান মিয়া, সুলেমান মিয়া, আরফান মিয়া, কাপ্তান মিয়া, গোলাপ মিয়াকে আসামী করা হয়। আদালত শুনানি শেষে ওই ভূমিতে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থিতাবস্থা বজায় এবং শান্তি শৃংঙ্খলা রক্ষায় উভয় পক্ষকে কারণ নোটিশ প্রেরণ করার জন্য বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেন। এছাড়াও আদালত থেকে আগামী ২৫ মার্চের মধ্যে বিরোধপূর্ণ জায়গার প্রকৃত মালিক কে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য বানিয়াচং থানা পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়। পরবর্তীতে বানিয়াচং থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করার জন্য বিথঙ্গল ফাঁড়ির এসআই মলাই মিয়াকে দায়িত্ব প্রদান করে। কিন্তু মামলা দায়েরের পরই আলী হোসেন গং আদালতের ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বিরোধপূর্ণ ভূমিতে অবৈধভাবে এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি উত্তোলন শুরু করে। এ খবর পেয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মলাই মিয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে এক্সকেভেটরটি জব্দ করেন। পরে মুচলেকা নিয়ে এক্সকেভেটরটির মালিক পুলিশের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। আখড়ার ভূমি থেকে মাটি উত্তোলনের কাজ বন্ধে পুলিশকে সহযোগিতা করায় উত্তেজিত হয়ে আলী হোসেন, বাবুল মিয়া গং আখড়ার ভক্ত মনোরঞ্জন বৈষ্ণবকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এতে নিরাপত্তাহীন হয়ে নিজের জীবন রক্ষার জন্য বানিয়াচং থানায় জিডি করেন মনোরঞ্জন বৈষ্ণব। এদিকে সোমবার রাতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে রাতের আধারে আলী হোসেন, বাবুল মিয়া গং ওই ভূমিতে গৃহ নির্মাণ করে। এতে আখড়ার ভক্তদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে যে কোন সময় এলাকায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন।
এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে আখড়ার মহন্ত সুকুমার দাস গোসাই জানান, আখড়ার দেবোত্তর সম্পত্তি দখলে নেয়ার জন্য আলী হোসেন গং পায়তারা করছে। তিনি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান।